দুর্গম সাজেক থেকে চমেকে, হামে ভোগা ৫ শিশু উড়ে গেল সেনা হেলিকপ্টারে

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক এলাকার দুর্গম পাহাড়ে হামে আক্রান্ত ৫ শিশুকে উন্নত চিকিৎসা দিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আনা হয়েছে। বুধবার (২৫ মার্চ) বিকেল ৫টায় সেনা হেলিকপ্টারে করে তাদের হাসপাতালে আনা হয়।

আক্রান্ত পাঁচ শিশু হলো- প্রতিল ত্রিপুরা (৫), রোকেন্দ্র ত্রিপুরা (৬), রোকেদ্র ত্রিপুরা (৮), নহেন্দ্র ত্রিপুরা (১০) ও দিপায়ন ত্রিপুরা (১৩)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম হুমায়ুন কবীর চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বুধবার বিকেল ৫টায় তাদের হাসপাতালে আনা হয়। এর আগে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট থেকে আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। আমরা তাদের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রস্তুত রেখেছিলাম।

শিশুদের অবস্থা শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক জানিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের সুষম খাবার নিশ্চিত করা হয়েছে। আপাতত তারা সুস্থ্ আছে।

সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম ৩ গ্রামে হামে আক্রান্ত হয়ে গত ২২ দিনে ৮ শিশু ইতোমধ্যে মারা যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে আরও শতাধিক শিশু। আক্রান্ত আছেন বয়স্ক লোকও।

সাজেক ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সিয়ালদাহ এলাকার ইউপি সদস্য ও কারবারি জুপ্পুইথাংক ত্রিপুরা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান, বেশ কিছুদিন ধরে এই হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত ২২ দিনে ৮ শিশু মারা মৃত্যুবরণ করেছে। শতাধিক আক্রান্ত আছে, আছেন বয়স্ক লোকও।

নিহত ৬ শিশু হলো- সাগরিকা ত্রিপুরা (১১), সুজন কুমার (৯), কহেন ত্রিপুরা (১০), বিধান ত্রিপুরা (১২) রেজিনা ত্রিপুরা (৮) ও নিক্সন ত্রিপুরা (৭)।

সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা নয়ন বলেন, দুর্গম অঞ্চল হওয়ায় আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিজিবির ২টি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিজিবির মেডিকেল টিমের সাথে ২৪ মার্চ যুক্ত হয় সেনাবাহিনী ও দিঘীনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরও ২টি টিম। খাগড়াছড়ি ব্রিগেডের ৫ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স থেকে ক্যাপ্টেন মো. শফিউল আলম পাভেলের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম এবং বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডাক্তার মো. আবু বক্কর সিদ্দিকের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম ২৪ মার্চ সাজেক যান। মেডিকেল টিমের পরামর্শে এই ৫ শিশুকে বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে আনা হয়। সেনানিবাস থেকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়।

এদিকে শিশুদের মৃত্যুর সঠিক কারণ অনুসন্ধানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান হাবিব জিতুকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।

এফএম/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!