দুরুহ রোগে হাসপাতালবন্দি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের মহি ভাণ্ডারী
অনটনে পড়ে সাহায্য চাইছেন সহৃদয় মানুষের
‘অ জ্যাডা ফইরার বাপ’সহ অসংখ্য জননন্দিত গানের রচয়িতা চট্টগ্রামের সঙ্গীতজগতের কিংবদন্তী সৈয়দ মহিউদ্দীন (মহি ভাণ্ডারী) দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। সেই সঙ্গে তার আছে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা। এরই মধ্যে এক দুর্ঘটনায় পড়ে গত তিন বছর ধরে ক্রাচে ভর দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে তাকে। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কিন্তু অর্থ সংকটে পড়ে সেই চিকিৎসাও এখন বন্ধ হওয়ার পথে।
তার ভক্ত-অনুরাগীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন এই গুণি শিল্পীর জন্য।
মহি ভাণ্ডারীকে বলা হয় জীবনমুখী আঞ্চলিক গানের স্রষ্টা। আধুনিক গানের ডামাডোলে যখন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান আকর্ষণ হারাতে বসেছিল তখনই হাতেগোনা যে কজন গীতিকার-সুরকার চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানকে আবারও প্রাণ দিয়েছেন মহি ভাণ্ডারী তাদের মধ্যে অন্যতম। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি শেফালী ঘোষ ও শ্যামসুন্দর বৈষ্ণবের সঙ্গীত গুরুও তিনি। তাঁর কথা ও সুরে শেফালী-শ্যামের বহু গান আজো দাগ কাটে শ্রোতাদের হৃদয়ে। শেফালী-শ্যাম যুগের পর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানকে আজও দর্শক-শ্রোতাদের মনে ঠাঁই করিয়ে দেয়ার পেছনে অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে তার।
তার রচিত এবং সুরারোপিত উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের প্রাধান্য সবচেয়ে বেশি। অ জ্যাডা ফইরার বাপ, মেজ্জান দিয়ে মেজ্জান দিয়্যে, আসকার ডি’র পুব পারত আঁর ভাঙ্গাচুরা ঘর, মন হাচারা মাঝি, পিরিত মানে ফুডুর ফাডুর, পাতা বালি, সাম্মান মাঝি সাম্মান বার, গিরাইল্ল্যা কচুর লতিসহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের জনক তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই গুণি শিল্পীর জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন যারা, তাদের একজন শাহরিয়ার পারভেজ। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে মহি ভাণ্ডারী বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। তিনি বিয়ে করেননি। পরিবার বলতে কেউ নাই। তাকে নগরীর একটা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা চলছে। ইতিমধ্যে হাসপাতালের বিল লাখের ওপরে চলে এসেছে। সবাই মিলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে আমাদের এই কিংবদন্তীকে সুস্থ করে তোলা যাবে।’
যদি সহৃদয় কেউ এই সহযোগিতায় অংশ নিতে চান, তাহলে ব্যক্তিগত একটি বিকাশ নম্বরে (০১৭১১-৯০৩২১২) সেই সহায়তা পাঠাতে পারবেন।
আরএ/সিপি