চট্টগ্রামের ‘কথিত’ যুবলীগ নেতা ও ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের বিরুদ্ধে দুবাই বসে চাঁদাবাজি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাবরের বিদেশে অবস্থান করলেও তার অনুসারীরা সক্রিয় রয়েছে। চাঁদার দাবিতে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী।
এবার চাঁদা না দেওয়ায় আইয়ূব আলী নামে একজন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও ব্যবসায়ীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মেরে ফেলার হুমকি দেয় হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে খুলশী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, আমি একজন ব্যবসায়ী ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক আড়াইটা ও গত ২৯ আগস্ট রাত আনুমানিক ১টা ২২ মিনিটে খুলশী থানাধীন আমার বাসায় অবস্থানকালে +৯৭১৫২৩….. ব্যবহারকারী হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর আমার হোয়াটস অ্যাপ নাম্বারে ভয়েস মেসেজ পাঠিয়ে নিজেকে বিবাদী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করার পাশাপাশি তার দলবল নিয়ে আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে ক্ষতি সাধনসহ মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। বর্তমানে আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।
জানা গেছে, যুবলীগ ক্যাডার বাবর দুবাইতে অবস্থান করলেও দেশে তার একটি অস্ত্রধারী গ্রুপ রয়েছে। দিনের বেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মী পরিচয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিলেও সন্ধ্যার পর এরা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে। সূর্য ডুবতেই নগরীর ডিসি হিল এলাকায় অবস্থান নেয় এ গ্রুপের ৩০ থেকে ৪০ জন। তারা মধ্যরাত পযর্ন্ত এখানে অবস্থান করে। মূলত ফেসবুকে ‘পোস্ট’ দিয়ে বাবরের চাঁদার টাকা আদায়ে ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ রয়েছে বলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যে আরও জানা যায়, গত বছরের ১৩ অক্টোবর র্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসী অসীম রায় বাবু মারা যাওয়ার পর পরই বাবর বিদেশ চলে যান। অসীম রায় বাবু এক সময় বাবরের অনুসারী হিসাবে পরিচিত থাকলেও পরবর্তীতে তাদের মধ্যে মত বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে বাবর আবার দেশে ফিরে আসেন। তবে গত ২৯ মে রাতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আরেক সন্ত্রাসী অমিত মুহুরী মারা গেলে বাবর আবার কৌশলে বিদেশ চলে যান। কিন্তু বন্ধ হয়নি তার চাঁদাবাজি। বিশেষ করে আগে থেকেই নির্ধারিত চাঁদার ভাগ তার সেকেন্ড ইন কমান্ডের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে দুবাইতে। কিন্তু ভুক্তভোগীরা প্রাণের ভয়ে অভিযোগ না করায় তেমন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, অস্ত্র ব্যবসার অভিযোগে ২০০৮ সালে থাই পুলিশের হাতে একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। সেখানে তার পাসপোর্টও জব্দ করা হয়েছিলো।
আদর/এসএ