দুদকের জালে দুই সাংসদ, একজন পটিয়ার সামশুল হক

অবৈধভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া ৪৬ জন ব্যক্তির একটি তালিকা তৈরি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সন্দেহ করা হচ্ছে, অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়া ছাড়াও বিদেশে অর্থপাচারের এসব ব্যক্তি জড়িত। এই ৪৬ জনের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে বর্তমানে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ইতিমধ্যে আভাস দিয়েছে দুদক।

৪৬ জনের এই তালিকায় অন্তত দুজন সংসদ সদস্যের নাম রয়েছে— তার একজন চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে নির্বাচিত সামশুল হক চৌধুরী। তিনি জাতীয় সংসদের হুইপও। অপর সাংসদ হলেন ভোলার সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।

চট্টগ্রামে আবাহনী ক্লাবসহ কয়েকটি ক্লাবে র‌্যাব ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চালানোর পর তার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন সামশুল হক চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম আবাহনীর মহাসচিব। জুয়া ও চলমান অভিযানে বিরুদ্ধে পিতার অবস্থান, মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতাকে মারার হুমকির অডিও নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন হুইপ শামসুল হক চৌধুরীর ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী শারুনও।

জুয়ার নামে ক্লাবগুলোতে অভিযান মানা যায় না’ উল্লেখ করে গত ২২ সেপ্টেম্বর সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম ক্লাব, সিনিয়র্স ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব সেখানেও তো তাস খেলা হয়। সেখানে তো অভিযান চালানো হয় না।’

ক্রীড়া ক্লাবগুলোর আয়ের উৎস হিসেবে তাস খেলাকে উল্লেখ করে সামশুল হক চৌধুরী ওই সময় আরও বলেন, ‘তাস খেললে বোর্ড মানি দেয় ক্লাবকে। এসব পয়সা ক্লাবের কাজে ব্যবহার হয়। ফুটবল ফেডারেশন বা অন্য কোনো সংস্থা তো ক্লাবকে টাকা দেয় না। এইভাবে যদি অভিযান চালানো হয়, তাহলে লোকজন খেলাধুলা ছেড়ে চলে যাবে।’

একই সময়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর সভাপতি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আসনের সংসদ সদস্য এমএ লতিফ বলেন, ‘আমাদের ক্লাবে কে জুয়ার আসর বসাতো তার সঠিক তথ্যপ্রমাণ থাকলে পুলিশ বা আপনারা এতোদিন চুপ ছিলেন? কেউ একটা কথা বললেই তথ্যপ্রমাণ ছাড়া দায়ী করা যায় না। আমি তো মনে করি ক্লাব নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ক্লাবের নাম দিয়ে জুয়া মাদক এসব পরিচালিত হোক আমিও চাই না।’

আবাহনী ক্লাবের এই দুই শীর্ষ কর্তার ধারণা, জুয়াবিরোধী অভিযানের নামে ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটিসহ চট্টগ্রামের ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। না বুঝে প্রভাবিত হয়ে ক্লাবের সুনামহানি করতেই এসব অপপ্রচার করা হচ্ছে।

ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িতদের সম্পদের অনুসন্ধানে ৩০ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু করে দুদক। বিভিন্ন সংস্থা থেকে এরই মধ্যে দুদক সংশ্লিষ্ট অনেকের নাম পেয়েছে। অবৈধ সম্পদের মালিক এসব ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছেন দুদক কর্মকর্তারা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আয়কর সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে তথ্যপ্রমাণ মেলার পর এসব ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকবে দুদক।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!