দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মুক্তিপণের ফোন এলো চট্টগ্রামের বাড়িতে

বতসোয়ানার সীমান্ত থেকে বেঁচে ফিরলেন চট্টগ্রামের তরুণ

দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণকারীদের কবল থেকে কৌশলে প্রাণ নিয়ে ফিরলেন চট্টগ্রামের সন্তান এক প্রবাসী তরুণ ব্যবসায়ী। অপহরণের ওই চক্রটি পাকিস্তানি নাগরিকেরা পরিচালনা করে থাকে বলে ইতিমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্য পাকিস্তানি নাগরিক বিকি ও রশিদ আলী নামের দুজনের পরিচয়ও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

অপহরণের শিকার হওয়া বাংলাদেশি ওই ব্যবসায়ীর নাম নুরুল হক সুমন (২৪)। তিনি চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পুকুরিয়ার বাসিন্দা। অপহৃত নুরুল ইসলাম সুমনের বাবা আজিজুল হকও দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী। পাঁচ বছর আগে সুমন দক্ষিণ আফ্রিকা যান।

কিছুদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকার পুমালাঙ্গা প্রদেশের কুমাথলাঙ্গা এলাকা থেকে সুমনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানা গেছে, ব্যবসাসূত্রে কুমাথলাঙ্গা এলাকার ব্যবসায়ী নুরুল হক সুমনের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে পাকিস্তানি নাগরিক রশিদ আলী ও বিকি নামের দুই ব্যবসায়ীর সঙ্গে। ঘটনার দিন সস্তায় মোবাইল কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ফোন করে সুমনকে তারা ডেকে নেয়। এরপর কৃষ্ণাঙ্গ কয়েকজন যুবককে দিয়ে অস্ত্রের মুখে জোর করে তাকে একটি গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিবেশী দেশ বতসোয়ানার সীমান্তবর্তী এলাকায়।

সেখানে নুরুল হক সুমনকে আটকে রেখে অপহরণকারী চক্র চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামে অপহৃত নুরুল হক সুমনের চাচা মুহাম্মদ তকি হাকিমের কাছে ফোন করে দুবাইয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে বলে। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে তিনটি নম্বর থেকে ফোন করা হয়। এগুলো হচ্ছে— +27749305198, +27848271469, +122224444.

মুক্তিপণ নিয়ে দরকষাকষির মধ্যেই শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে অপহৃত নুরুল হক সুমন দুই কৃষ্ণাঙ্গ পাহারাদারকে ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় একটি পরিবারের সহযোগিতায় পালিয়ে যায়। এরপর তিনি স্থানীয় কোয়াগাফন্টেইন থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা যৌথ অভিযানে চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের এক সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়। তবে মূল অভিযুক্ত দুই পাকিস্তানি নাগরিক রশিদ আলী ও বিকি পালিয়ে গেছে।

এর আগে গত ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় দক্ষিণ আফ্রিকার এই পুমালাঙ্গা প্রদেশের এয়ারমেলো নামক এলাকায় সংঘবদ্ধ সশস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ ডাকাতদল এক বাংলাদেশি প্রবাসীর দোকানে হানা দিয়ে জিনিসপত্র লুট করে চলে যাওয়ার সময় এক ডাকাতকে পেছন থেকে ধরার চেষ্টা করেন দোকানমালিক আরিফ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গুলি ছুঁড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুরে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!