তিন ভাইয়ের চুরির চক্র, ৪০০ চুরির রেকর্ড

মনির, রহিম ও জাহাঙ্গীর। তিনজনই আপন ভাই। তারা তিনজন মিলে গড়ে তুলেছেন চোরচক্র। তাদের চক্রে আছে আরও কয়েকজন। তবে মূল চুরির নেতৃত্বে এ তিন ভাই-ই। এর মধ্যে দুই ভাই বাইরে থেকে পাহারা দেয়, অন্যভাই চুরি করে। এভাবে গত ৫ বছরে প্রায় ৪০০ চুরির রেকর্ড গড়েছে তিন ভাইয়ের এ চুরির চক্র।

আগে বিচ্ছিন্নভাবে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেও এবার চক্রের তিন ভাই-ই একসাথে ধরা পড়লো পুলিশের জালে। সোমবার (২৫ অক্টোবর) কোতোয়ালী থানা পুলিশ মো. মঈনুদ্দিন প্রকাশ মনির (৩২), মো. রহিম (৩০), মো. জাহাঙ্গীর (২৯) এবং তাদের এক সহযোগী মোছাম্মৎ নয়ন তারা আক্তারকে (২১) গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ১ লাখ ৫ হাজার টাকা, ১৫টি হীরার আংটি, ৪ জোড়া হীরার কানের দুল, ২টি হীরার ব্রেসলেট ও ১টি হীরার শাড়ির ক্লিপ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ তিন ভাই নগরের বিভিন্ন বাসাবাড়ির জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল চুরি করে।

তারা রাতের বেলায় রিকশা নিয়ে নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে খালি বাসাকে টার্গেট বানিয়ে চুরি করে। এদের মধ্যে মঈনুদ্দিন চুরি করে, আর রহিম ও জাহাঙ্গীর থাকে পাহারায়। আটককৃতদের মধ্যে জাহাঙ্গীর এর আগেও ছিনতাই মামলায় ৮ বছর সাজা ভোগ করে কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হয়।

বের হয়ে ছিনতাই ছেড়ে অন্য ভাইদের মতো চুরির পেশায় জড়িয়ে পড়ে সে। চট্টগ্রাম নগরীর আসকার দীঘির পাড় এলাকার একটি বাসায় গত ১১ অক্টোবর গভীর রাতে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় করা মামলার তদন্তে তিন ভাইয়ের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। চুরির দুইদিন পর ১৩ অক্টোবর ইব্রাহীমকে সন্দেহজনক আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে পরে অন্য দুই ভাইসহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘এরা তিন ভাই গত পাঁচ বছরে প্রায় ৪০০ চুরি করেছে। ওদের প্রত্যেকের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। আরও কিছু ঘটনায় ওদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে, আমরা তদন্ত করে সেগুলোর ব্যবস্থা নিব।’

তিনি আরও বলেন, ‘রহিম রিকশা চালানোর আড়ালে চুরি করে। সে তার অপর দুই ভাই মঈনুদ্দীন ও ইব্রাহীমকে যাত্রীবেশে নিয়ে ঘুরে বেড়ায় বিভিন্ন অলিগলিতে। সুযোগ বুঝে মঈনুদ্দীন সানশেড দিয়ে কোনো ভবনে উঠে জানালা কিংবা বারান্দার গ্রিল বাঁকা করে ঘরে ঢুকে। আর অন্য দুই ভাই পাহারায় থাকে। চুরি করা মালামাল তারা জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে।’

নেজাম জানান, আটককৃতদের মধ্যে মঈনুদ্দীনকে চুরির অপরাধে ২বার, ছিনতাই ও নারী নির্যাতনের অপরাধে ২বার, মোট ৪বার গ্রেপ্তার হয়। এছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অপরাধে রহিমকে একবার গ্রেপ্তার করে চকবাজার থানা পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে পৃথক আরও দুটি মামলা রয়েছে।

অন্যান্য মালামাল উদ্ধারে মঈনুদ্দীন ও অন্যদের তিন দিনের জন্য রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।

বিএস/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!