তিন ভাইকে পেটালো চট্টগ্রাম মেডিকেলের কর্মীরা

গেইটম্যানের চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করাই অপরাধ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ মাকে নিয়ে যাওয়া তিন ভাইকে বেধড়ক পিটিয়েছে এক গেইটম্যানসহ মেডিকেলের কিছু কর্মচারী। প্রহারে আহত এই তিন ভাই হলেন চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন এলাকার মো. জাহেদ, মো. আজাদ ও মনির হোসেন।

কর্মীদের হাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতাল জিম্মি এবং পদে পদে টাকা নেওয়াকে কেন্দ্র আলোচনা-সমালোচনার মাঝেই নির্মম এই ঘটনা সামনে এল।

জানা গেছে, বুধবার (১ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন এলাকা থেকে তিন ভাই তাদের অসুস্থ মাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পঞ্চম তলার ২৫নং ওয়ার্ডে এনে ভর্তি করেন। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত ৮টায় রাতের খাবার নিয়ে তিন ভাই ও তাদের এক ভাইয়ের স্ত্রী ওয়ার্ডে ঢুকতে চাইলে গেইটম্যান রাকিব টাকা ছাড়া তাদের ঢুকতে দেবে না বলে জানিয়ে দেয়।

YouTube video

জানা গেছে, এ সময় গেইটম্যানের চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় মেডিকেলের আরও কিছু কর্মচারী মিলে তিন ভাইকে বেধড়ক মারধর করে। মারধরের একপর্যায়ে মেজ ভাই মো. আজাদ অজ্ঞান হয়ে যান। মেডিকেলের কর্মচারীরা এ সময় অপর দুই ভাই জাহেদ ও মনিরকে মেডিকেলে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, বন্ধুবান্ধব-আত্মীয়স্বজনরা গিয়ে মেডিকেলের পুলিশ ফাঁড়ি থেকে জাহেদ ও মনিরকে উৎকোচের বিনিময়ে ছাড়িয়ে এনেছে।

অন্যদিকে এ ঘটনায় আহত আজাদকে চমেক হাসপাতালের পঞ্চম তলার ২৮ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) কর্মচারীদের বাধ্যতামূলক বকশিস নেওয়া, বেপরোয়া আচরণে অতিষ্ঠ রোগী ও স্বজনরা। রোগীর স্বজনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে নানা অজুহাতে নেন বকশিস। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে টাকা, লিফ্ট ব্যবহারে টাকা, ওয়ার্ডে ঢুকতে বা ট্রলিতে প্রত্যেকটি স্থানে নির্দিষ্ট বকশিস দিয়েই পরবর্তী ধাপে যেতে হয়। এছাড়াও কারণে-অকারণে হেনস্তার শিকার হন রোগী ও স্বজনরা।

হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও স্বজনদের সাথে আলাপ করলে তারা বলেন, এই হাসপাতালের প্রতি ইঞ্চি পেরোতে টাকা দিতে হয়। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে আনসারকে, লিফট ব্যবহারে, ওয়ার্ডে ঢুকতে, ট্রলিতে বা হুইল চেয়ারে করে রোগী আনা নেওয়া করতে বহনকারীকে, আয়াদের সাহায্য নিলে, রোগী কেমন আছেন একটু দেখার অনুরোধ করলে নার্সকে টাকা দিতে হয়। বকশিস দিয়ে হাসপাতাল কর্মচারীদের খুশি করতে পারলেই তড়িঘড়ি করে সেবা পাওয়া যায়। নয়তো তাদের ঝাড়ি খেতে হয়।’

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm