ডেঙ্গু রোগী মশারি টাঙায় না চট্টগ্রাম মেডিকেলে, তদারকি নেই ডাক্তার-নার্সদের
বাড়ছে সাধারণ রোগী আক্রান্তের ঝুঁকি
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থেকে জ্বর নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হন মো. আনিছ। জ্বর ছেড়ে আবার আসতো, ছিল মাথাব্যথাও। মেডিকেলের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়ার পর তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) থেকে হাসপাতালে আছেন তিনি। জ্বর কমলেও তার চোখের কোণে রক্ত জমাট বেঁধে আছে। কিন্তু বেডে বসে থাকলেও টাঙানো মশারি খুলে ফেলেছেন আনিছ। মেডিকেলের ডাক্তার-নার্সরা তার বেডের পাশ দিয়ে আসা-যাওয়া করলেও মশারি টাঙানোর ব্যাপারে কোনো তাগাদা দিচ্ছেন না।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) চট্টগ্রাম মেডিকেলের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে সরেজমিন গিয়ে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দেখা গেছে এমন চিত্র।
আনিছের মতো এমন আরও দু’জন রোগী ভর্তি আছেন এই ওয়ার্ডে। এদের মধ্যে একজনতো নিজেই চলে গেছে দোকান থেকে ওষুধ আনতে। অনেকে পরীক্ষা করানোর জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলে গেছেন পায়ে হেঁটে।
জানা গেছে, ১৪ এবং ১৬ নম্বর নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন মোট চার জন ডেঙ্গু রোগী।
সরেজমিন গিয়ে আরও দেখা গেছে, ওয়ার্ডে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে রাখা হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীদের। ডেঙ্গু রোগীর জন্য পর্যাপ্ত স্যালাইন বরাদ্দ নেই ওয়ার্ডে। রোগীর জন্য ১০ পিস স্যালাইন প্রয়োজন হলে ওয়ার্ড থেকে দেওয়া হচ্ছে ৬ পিস করে। অন্যগুলো বাইরের দোকান থেকে কিনতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মতে, সাধারণ রোগীদের সঙ্গে ডেঙ্গু রোগী রাখলে অন্যরা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
এছাড়া এখনকার বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা দুটিই এডিস প্রজননের জন্য উপযোগী। ধারণা করা হচ্ছে, জুলাইয়ের শেষ ভাগে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়বে। সাধারণ ডেঙ্গুর প্রকোপ মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বলেও জানান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় দু’জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদৌস বলেন, ‘থেমে থেমে বৃষ্টি, আবার কখনও উত্তপ্ত তাপমাত্রায় এডিস মশার বংশবিস্তার করতে পারে। এছাড়া এখন কেবল স্বচ্ছ পানি নয়, নোংরা পানিতেও এডিস মশা জন্মায়। তাই এক্ষেত্রে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। বাসাবাড়িতে জমে থাকা পানি এডিস মশা প্রজননের আদর্শ স্থল।’
তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে এডিস মশা জন্মানোর পসিবিলিটি কম। কারণ এবারের বৃষ্টির সঙ্গে ঝাড়োহাওয়া ছিল্। এতে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস হতে পারে।’
আইএমই/ডিজে