ডেঙ্গুর প্রকোপে মশা তাড়ানোর সামগ্রীর দাম বেড়েছে পটিয়ায়

সারাদেশব্যাপী ডেঙ্গু সতর্কতার কারণে মশার কয়েল, মশা মারার ইলেক্ট্রিক ব্যাট, স্প্রে, ক্রিম, লোশন ও মশারির বেড়েছে। চাহিদা বাড়ার সুযোগে এসব সামগ্রীর দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পটিয়া সদরসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এসব উপকরণের সরবরাহ ঘাটতিও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দোকানে লোশন ও কোনো কোনো ব্র্যান্ডের স্প্রে পাওয়া যাচ্ছে না।

দোকানিরা জানিয়েছেন, এখন মানুষের মনে ডেঙ্গু আতংক। হঠাৎ করেই মশারিসহ এসব পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় স্প্রে, লোশন ও রিফিল আনলে দুয়েকদিনেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। আগে মাসের পর মাস দোকানে এসব পণ্য পড়ে থাকত।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, বর্ষায় মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি ডেঙ্গুজ্বরে রোগী বাড়ছে।

ফার্মেসি দোকানিরা জানিয়েছেন, মশা থেকে রক্ষা পেতে ওডোমাস ও রোলআন ক্রিমের চাহিদাও বেড়েছে। বাজারে ওডোমাস অয়েন্টমেন্ট ১০০ গ্রাম ক্রিম অন্য সময়ে ২০০ টাকার কম দামে বিক্রি হয়। এখন এটির দাম বেড়ে ৩০০ টাকা হয়েছে।

দোকানে আসা ক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, আশপাশের সব ফার্মেসি খুঁজে শেষ পর্যন্ত এখানে এসেছি।

পটিয়ায় বিভিন্ন মার্কেটের সুপার শপ ও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাড়তি চাহিদায় স্প্রে, লোশন, কয়েল ও মশারির দাম বেড়েছে। যদিও কোম্পানিগুলো এসব পণ্যের দাম বাড়ায়নি। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে এসিআই অ্যারোসল, স্কয়ারের এক্সপেল বেশি বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় সব ব্র্যান্ডের মশা মারার স্প্রে ক্যানপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা দাম বেড়েছে। হিট ব্র্যান্ডের ৪৭৫ মিলি লিটারের স্প্রে ২৭০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই ব্র্যান্ডের ৮০০ মিলির স্প্রে ক্যান ৪২০ টাকা ছিল। তা বেড়ে ৪৫০ থেকে ৪৭০ টাকা হয়েছে। অন্যান্য ব্র্যান্ডের মধ্যে আগে ছোট স্প্রে ক্যান ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও তা এখন ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আলম প্লাজার বিক্রেতা নাসির উদ্দীন ও শাহ আমির মার্কেটের লিলি স্টোরের মুরাদ হোসেন জানান, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মশার স্প্রে বিক্রি বহুগুণ বেড়েছে। এখন সব কোম্পানি চাহিদা মতো সরবরাহও করছে না। চাহিদা বেড়ে গেলে পণ্যের দামেরও তারতম্য হয়।

পটিয়ার বাজারে এসিআই, গুডনাইট, নিম ও তুলসীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্র্যান্ডের কয়েলও বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ টাকার কয়েল বিক্রি হচ্ছে ৮ টাকা। বুস্টার কয়েলের দাম ১০ থেকে বেড়ে ১৫ টাকা হয়েছে। এদিকে, খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারিতে বেশি দামের কারণে তারা বাড়তি দাম নিচ্ছেন।

কোম্পানির কয়েল প্রতি প্যাকেট (১২ পিস) ৬০ থেকে ১০০ টাকা এবং স্প্রে ক্যান পরিমাণ অনুযায়ী ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

স্কয়ার টয়লেট্রিজের মার্কেটিং অফিসার সুব্রত দাশ জানান, সম্প্রতি মশা মারার উপকরণের চাহিদা বেশ বেড়েছে। সে তুলনায় সরবরাহ কম রয়েছে। তবে এ অবস্থায় কোনো উপকরণের দাম বাড়ানো হয়নি।

বাজারে মশা মারার বৈদ্যুতিক ব্যাটের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। দুই সপ্তাহ আগে এই ব্যাট ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এখন তা ৪৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মশারির চাহিদাও বেড়েছে। বাজারে ম্যাজিক, টানা, গোল, রক্সি ও বেবি এসব নামে মশারি বিক্রি হচ্ছে। তবে এখন বেশি বিক্রি হয় ম্যাজিক মশারি। আকারভেদে সিঙ্গেল মশারি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৫০০ টাকায়। যা আগে ১৫০-২০০ টাকা ছিল। আর ডাবল মশারি আগে ৩০০-৬০০ টাকায় পাওয়া যেত। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৫০০-১০০০ টাকায়। ভালো মশারি ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে প্রতিটি মশারির দাম আকারভেদে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। এর ফলে খুচরায় দাম বাড়ছে বলে জানা গেছে।

এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!