ডলফিনের ময়নাতদন্ত চট্টগ্রামের হাসপাতালে, পিঠে আঘাত ও ফুসফুসে ইনফেকশন

হালদা থেকে মৃত উদ্ধার হওয়া ডলফিনের প্রাথমিক ময়নাতদন্তে ফুসফুসের সংক্রমণ এবং পিঠে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, ডলফিনটি জালে আটকা পড়ে শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে পিঠে আঘাতের কারণে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) একটি গাঙ্গেয় ডলফিনের ময়নাতদন্ত করা হয় সিভাসু ভেটেরিনারি হাসপাতালে।

গত ১ আগস্ট চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার হামিদ চর এলাকার কর্ণফুলী নদী থেকে ডলফিনটি উদ্বার করা হয়েছিলো। শুশুক বা গাঙ্গেয় ডলফিন বিপন্ন প্রজাতিভুক্ত প্রাণী যাদের সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে। বুদ্ধিমান এই প্রাণীটি বলা হয়ে থাকে নদীর স্বাস্থ্য উপলব্ধির বায়োলজিক্যাল প্যারামিটার। আইউসিএনের বিপন্ন তালিকাভুক্ত এ প্রজাতি বর্তমান পৃথিবীতে আর মাত্র ১২০০-১৫০০টি সদস্য অবশিষ্ট রয়েছে।

পৃথিবীতে বিলুপ্ত প্রজাতির ডলফিন কেন মারা যাচ্ছে তা খতিয়ে দেখার জন্য ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় সিভাসুতে। ডলফিন কিভাবে মারা গেলে সে কারণগুলো সেখানে দেখা হয়। যেমন জালে আটকে পড়ে শ্বাসবন্ধজনিত কারণ, আঘাত, পানির দূষণ বা বিষক্রিয়াজনিত কারণ, খাদ্য বিষক্রিয়া, রোগ বা জীবাণু সংক্রমণে মৃত্যু কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হয়।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি এন্ড প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জুনায়েদ সিদ্দিকী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আপাতত ময়নাতদন্ত হলো। এরপর এ ডলফিনের ডিএনএ টেস্ট করা হবে। যাতে ফুসফুসে সংক্রমণ কিসের এবং ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসের আক্রমণ আছে কি-না তা দেখা হবে। এছাড়াও ডলফিনের খাদ্য অভ্যাস উপযোগী উপাদান দেখে সে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে হালাদায়।

হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ইদানিং কয়েকটি ডলফিনের মৃতদেহ আমরা পেয়েছি। কী কারণে ডলফিনগুলোর মৃত্যু হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার জন্য ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়া হালদাকে ডলফিনের জন্য উপযোগী গড়ে তুলতে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ময়নাতদন্তে আরও ছিলেন সিভাসুর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, ভেটেরিনারি হসপিটালের পরিচালক অধ্যাপক ড. ভজন চন্দ্র দাস, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার এবং ফিশারিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর।

এর আগে গত ১ আগস্ট কর্ণফুলী থেকে উদ্ধার হওয়া ডলফিনটির প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট করেছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া, চট্টগ্রাম বনবিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জার ইসমাইল হোসেন এবং বনবিভাগের কর্মী অজয় দেব।

এএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!