ট্রেন কালুরঘাট সেতুতে ওঠার আগমুহূর্তে গতি বেশি ছিল, সিনগ্যাল দেখেননি চালক
চালক-গেটকিপারসহ ৭ জনের জবানবন্দি
চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর ওপর ট্রেনের সঙ্গে কয়েকটি গাড়ির সংঘর্ষে তিনজন নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত ট্রেনচালক, সহকারী চালক ও গার্ডসহ অন্যরা জবানবন্দি দিয়েছে। তদন্ত কমিটির কাছে তারা জানায়, ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ও সিগন্যাল না দেখার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া সিনগ্যাল না দেখার যে অভিযোগ তা যাচাই করতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও)।
সোমবার (১৬ জুন) সকালে ডিটিও অফিসে উপস্থিত হয়ে জবানবন্দি দেন পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের দায়িত্ব পালনকারী লোকোমাস্টার (চালক) গোলাম রসুল, সহকারী লোকোমাস্টার আমিন উল্লাহ, গার্ড সোহেল রানা এবং অস্থায়ী গেটকিপার মাহবুব আলম, স্থায়ী গেটকিপার খুখুমনি চাকমা, চৌকিদার মো. সিফাত, কালুরঘাট সেতুর ইজারাদার নিযুক্ত ম্যানেজার মো. আসাদ।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, চালক গোলাম রসুল ও সহকারী চালক আমিন উল্লাহ তদন্ত কমিটিকে জানান, ট্রেনটি কালুরঘাট সেতুতে ওঠার আগমুহূর্তে গতি বেশি ছিল। এ কারণে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ট্রেন সেতুতে উঠে যায়। এছাড়া সিগন্যাল দেখতে পাননি তারা।
জবাবে তদন্ত কমিটির সদস্যরা তাদের প্রশ্ন করেন—কালুরঘাট রেল সেতু একটি ‘ডেটস্পট’। সেতুর ওপর ওঠার আগে ট্রেন থামাতে হয়। চৌকিদার থেকে স্লিপ নিয়ে ১০ কিলোমিটার গতিতে পুনরায় ট্রেন চালাতে হয়। রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী ট্রেন থামাননি কেন।
কিন্তু তদন্ত কমিটির সদস্যদের এমন প্রশ্নের উত্তর চালক ও সহকারী চালক দিতে পারেননি বলে জানা গেছে।
এছাড়া সিগন্যাল না দেখার যে অভিযোগ, তা সরেজমিন দেখতে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’ ট্রেন গোমদন্ডী স্টেশন আসলে ইঞ্জিন ক্যাবে ওঠেন। এরপর তিনি সিগন্যাল দেখেন।
জানা গেছে, এ সময় ডিটিও চালকদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এছাড়া নিরাপদে ট্রেন পরিচালনার জন্য বিভাগীয় পরিবহন অফিস থেকে জানািলহাট, গোমদন্ডী স্টেশন ও কালুরঘাট রেল সেতুর জন্য চারটি ওয়াকিটকি প্রদান করেন।
এর আগে ৫ জুন রাত সোয়া ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর বোয়ালখালী অংশে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে কয়েকটি গাড়ির সংঘর্ষে শিশুসহ তিনজন নিহত হন। আহত হন অন্তত পাঁচজন। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিভাগের ডিটিও মো. আনিসুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে ডিটিও মো. আনিসুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সিএম/ডিজে