কোনো ধরনের দরপত্র আহ্বান ছাড়াই শুধুমাত্র বোর্ড মিটিংয়ের সিদ্ধান্তে চট্টগ্রাম বন্দরের ৮ একরের জায়গা ভাড়া দেওয়া হয়েছে এক প্রতিষ্ঠানকে। এর আগেও চট্টগ্রাম বন্দরের প্রায় ২৩ একরের জায়গা ৩০ বছরের জন্য ভাড়া নেয় প্রতিষ্ঠানটি। সেই জায়গার মেয়াদ বাড়ানোর সঙ্গে ওই ৮ একরের জায়গা ইজারা নেওয়ার আবেদন করলে বন্দর কর্তৃপক্ষ বোর্ড মিটিংয়ে তা অনুমোদন দেয়।
তবে চট্টগ্রাম বন্দরের ভূমি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী, সন্নিহিত জলসীমাসহ নদী তীর ব্যতীত চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ভূসম্পত্তি, স্থাপনা ও অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তি দরপত্র আহ্বান ছাড়া, লাইসেন্স বা ইজারা প্রদান করা যাবে না।
জানা গেছে, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ‘মেসার্স ইনকনট্রেড লিমিটেড’ নামের প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম বন্দরের চট্টগ্রামে শাহ আমানত বিমানবন্দরের সড়ক সংলগ্ন আট একর খালি জায়গা ইজারা নেওয়ার জন্য আবেদন করে। এর আগে প্রতিষ্ঠানটি ২০০৫ সালের ১৩ জুলাই ৩০ বছরের জন্য বন্দর থেকে ২২ দশমিক ৭৭৬ একর জায়গার ইজারার নেয়। সেই জায়গার মেয়াদ শেষ হতে এখনও ১১ বছর ২ মাস বাকি। কিন্তু তারা এই জায়গাটির ইজারার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করলে বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০ বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ায়। একই সঙ্গে আট একরের জায়গা কোনো ধরনের দরপত্র ছাড়াই বোর্ড মিটিংয়ের সিদ্ধান্তে ওই প্রতিষ্ঠানকে ১১ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়।
আরও জানা গেছে, ১৩ নম্বর খালের উত্তর পাশে (উজানে) এজেন্ডার ২.১ নম্বর এ বর্ণিত ১৫টি শর্ত প্রতিপালন সাপেক্ষে অতিরিক্ত আট একর খালি জায়গা বর্তমান আইসিডির ইজারার মেয়াদকাল পর্যন্ত ইজারামূলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ায় বরাদ্দ প্রদানের সুপারিশ ছিল বন্দরের নির্বাহী বিভাগের। চলতি বছরের ৯ এপ্রিল নির্বাহী বিভাগের সুপারিশের পরিপ্রক্ষিতে বোর্ড মিটিংয়ে ইজারার বিষয়টি পেশ করা হলে, ওইদিনই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা দিলে ৮ একর জায়গার জন্য একাধিক প্রতিষ্ঠানের দরপত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকতো। সেখানে সর্বোচ্চ দরদাতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ইজারার এককালীন অর্থসহ প্রকৃত ভাড়ার চেয়ে আরও কয়েকগুণ ভাড়া আদায় করার সুযোগ ছিল। একইসঙ্গে নিয়ম পালনের ফলে প্রতিষ্ঠানটির স্বচ্ছতাও নিশ্চিত করা যেতো। কিন্তু নিয়ম না মেনে ইজারা দেওয়ায় সরকার হারিয়েছে কয়েক গুণ রাজস্ব।
এই বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ম্যানেজার (এস্টেট) মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন ও সচিব মো. ওমর ফারুকের মুঠোফোন একাধিকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।
একইসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অর্থ) ও চবক বোর্ড সদস্য মো. শহীদুল আলমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন।
ডিজে