টেকনাফের ইয়াবা বের হল রাজশাহীতে, পেটের ভেতর ১৫ প্যাকেট গলে যুবক তখন লাশ

কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে তিনি যখন পাবনার উদ্দেশ্যে রওনা হন, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে খেয়ে ফেলেন ৩১টি ছোট ছোট প্যাকেটে ১৫৫০ পিস ইয়াবা। উদ্দেশ্য ছিল, পাবনা পৌঁছে পেট থেকে ইয়াবার প্যাকেটগুলো বের করে নেবেন। কিন্তু এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় পথেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করার পর আলট্রাসনোগ্রাফি করে হদিস মেলে ১৫৫০ পিস ইয়াবার। এর মধ্যেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরে লাশের পেট কেটে সেগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।

এমন ঘটনা ঘটলো পাবনায়। পেটে ইয়াবা বহন করে যার মৃত্যু হল তার নাম শুকুর আলী। তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাজারপাড়া এলাকার মোক্তার আহমেদের ছেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, কক্সবাজার থেকে ৩১টি প্যাকেটে ১৫৫০ পিস ইয়াবা খেয়ে বহন করার সময় পাবনায় ধরা পড়েন শুকুর আলী। পরে দুজন ইয়াবা ব্যবসায়ী ১৫০ পিস ইয়াবাসহ ধরা পড়লে তারা পুলিশকে জানায় শুকুরের কাছ থেকে ইয়াবা কেনার কথা। তথ্য পেয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর পাবনা হাসপাতাল রোড এলাকা থেকে আরও তিনজনের সঙ্গে শুকুরকে অসুস্থ অবস্থায় গ্রেফতার করে গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ।

পরে আলট্রাসনোগ্রাফি করে তার পেটে ইয়াবা দেখা যায়। তার পেট থেকে বড়িগুলো উদ্ধার করার জন্য তাকে প্রথমে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে শুকুর আলীর মৃত্যু হয়।

রাজশাহীর রাজপাড়া থানার ওসি শাহাদাত হোসেন খান জানান, শুকুর আলীর মৃত্যুর পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মালেকের উপস্থিতিতে একজন চিকিৎসক তার ময়নাতদন্ত করেন। এ সময় তার পাকস্থলী থেকে ৩১ প্যাকেট ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়। ওসি বলেন, ইয়াবা বড়িগুলোর কিছু পেটের গরমে গলে যায়। এ কারণেই মূলত তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতেই তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, উদ্ধার করা ইয়াবা আলামত হিসেবে পাবনায় পাঠানো হবে।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. নওশাদ আলী বলেন, ওই ব্যক্তির পেট থেকে মোট ৩১ প্যাকেট ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ১৬টি প্যাকেট অক্ষত ছিল। ১৫টি ফেটে যায়। প্রতিটি প্যাকেটে ৫০টি করে বড়ি ছিল। নওশাদ আলী বলেন, প্যাকেট ফেটে বড়ি বের হয়ে গলে যাওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

পাবনা সদর থানার ওসি নাসিম আহমেদ জানান, শুকুর টেকনাফ থেকে পেটে ইয়াবা নিয়ে পাবনায় বিক্রি করতে এসেছিলেন। পাবনার স্থানীয় তিনজন মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ডিবি পুলিশ শুকুরকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময় তাদের কাছে ১৫০টি ইয়াবা পাওয়া যায়। কিন্তু পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, তাদের কাছে আরও ইয়াবা আছে। পরে তারা স্বীকার করে যে শুকুর আলীর পেটের ভেতর ইয়াবা আছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!