করোনা ভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সরকার গত ১৭ মার্চ থেকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। কয়েক দফায় ছুটি বাড়িয়ে সর্বশেষ সেটি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এই ছুটি গড়াতে পারে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত— এমন ইঙ্গিত দিয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীই। এই দীর্ঘমেয়াদী ছুটির কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ঘাটতি পুষিয়ে নিতে সারা দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাস সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে নেওয়ার উদ্যোগ নেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
একইভাবে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ধারাবাহিকতা রাখতে মাধ্যমিকের পর গত ৭ এপ্রিল থেকে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাসও সংসদ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হচ্ছে। ৫ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের রুটিনের মতো ‘ঘরে বসে শিখি’ শিরোনামে প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রতিটি বিষয়ের ওপর ২০ মিনিট করে ক্লাস কার্যক্রম দেখানো হলেও এখন সময়সূচি পরিবর্তন করে সকাল ৯টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত দেখানো হয়। পরবর্তীতে আগের ক্লাসগুলো একদিন পর পর পুনঃপ্রচার করা হচ্ছে।
যতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, ততোদিন সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাসা থেকে বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে। গত ২৯ মার্চ থেকে প্রতিটি বিষয়ের জন্য ২০ মিনিট সময় বরাদ্দ করে প্রতিদিন মোট আটটি ক্লাসের মাধ্যমে এ পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হয়। পাশাপাশি প্রতিটি ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীদের হোমওয়ার্কও (বাড়ির কাজ) দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ক্লাস শুরুর এক সপ্তাহ পার না হতেই অভিযোগের বহর বাড়ছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের।
সংক্ষিপ্ত এক জরিপ থেকে দেখা যায়, গড়ে ১০ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছয়জনই নানা কারণে সংসদ টেলিভিশনের ক্লাস কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে না। বাকি চারজন অংশ নিলেও ত্রুটিপূর্ণ এবং সংক্ষিপ্ত ক্লাস হওয়ায় আগ্রহ পাচ্ছে না ক্লাস করার। এতে সুফলের পরিবর্তে পরিশ্রম অনেকটা বিফলে যাওয়ার পথে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, সংসদ টেলিভিশনের এই শ্রেণি কার্যক্রমে আগ্রহ বাড়ছে শিক্ষার্থীদের। যদিও গড়ে ছয়জন শিক্ষার্থী এই সকল ক্লাস কার্যক্রমে নিচ্ছে না— এমন তথ্য উঠে এসেছে চট্টগ্রাম প্রতিদিনের অনুসন্ধানে।
টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাস নিয়ে অভিভাবকদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার মধ্যে রয়েছে— ত্রুটিপূর্ণ সংক্ষিপ্ত ক্লাস, গতানুগতিক ধারার পাঠদান কার্যক্রম, মাল্টিমিডিয়া পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার না থাকা, অনভিজ্ঞ শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করা, রুটিন অনুযায়ী নির্ধারিত ক্লাস না হওয়া, রুটিনে নবম শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ক্লাস না রাখা এবং মনিটরিংয়ের অভাব।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার মধ্যে রয়েছে— রুটিন অনুযায়ী ক্লাস না হওয়া, শিক্ষকের কথায় আগ্রহ না পাওয়া, শব্দ ও স্ক্রিন ব্ল্যাকবোর্ডের সমস্যা, পাঠদানের বিষয় না বোঝা, পরিপূর্ণ ক্লাস না হওয়া, ক্লাসের সময় কম হওয়া এবং ইউটিউবভিত্তিক ক্লাসের চেয়েও টেলিভিশনের ক্লাস কার্যক্রম অনাকর্ষণীয় হওয়া।
এ সকল কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে এই মাধ্যমে পড়াশোনা আনন্দদায়ক হয়ে উঠছে না। আবার অধিকাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষকের পাঠদানের বিষয়ে ভালোভাবে আয়ত্ত করতে না পারায় অনীহা বাড়ছে টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস করায়।
সিদ্ধান্ত রয়েছে, টেলিভিশনের মাধ্যমে সপ্তাহে ৩৫টি ক্লাস নেওয়া হবে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্লাস চলবে। ধাপে ধাপে রুটিনও প্রকাশ করছে মন্ত্রণালয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনা আতঙ্কের কারণে পাঠদান কার্যক্রমের জন্য শিক্ষক, টেকনিশিয়ান ও ক্যামেরাপারসন পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পাওয়া গেলেও তাদের সময়মতো মিলছে না। এ কারণেই রুটিন অনুসারে বিষয়ভিত্তিক মিল রেখে ক্লাস রেকর্ড করে তা প্রচার করা হচ্ছে না। এক বিষয়ের স্থলে অন্য বিষয়ের ক্লাস নিতে হয়েছে। তবে দ্বিতীয় দফা থেকে এটি থাকবে না বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই ক্লাসগুলো দেখছি। কী পরিমাণ অব্যবস্থাপনা এই ক্ষেত্রে তা ক্লাসগুলো দেখলেই ক্লিয়ার হয়ে যায়। আমি একজন শিক্ষক, পাশাপাশি আমি অভিভাবকও। আমার মেয়ে ক্লাস সেভেনে পড়ে। এখান থেকে সে তো কিছুই বোঝে না। সাউন্ড খুবই কম। যদি নরমাল টিভি হতো তাহলে ধরে নিতাম টিভির সমস্যা। কিন্তু তা তো না। আবার শিক্ষকের কথার সাথে চলে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। এজন্য তো আরও ভালো করে বোঝাও যায় না যে শিক্ষক কী পড়াতে চাইছেন।’
হতাশার সুরে এই শিক্ষক আরও বলেন, ‘আমি নিজে শিক্ষক বলে জোর করে পড়াতে পারি। ভাবলাম এই মাধ্যমে হয়তো মেয়ে আগ্রহ নিয়ে পড়বে। কিন্তু এখন তাকে জোর করে বসিয়ে রাখতে হয়। মনোযোগ একেবারেই নেই।’
সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বললো, ‘আমি টিচারের কথা বুঝি না ভালো করে। বোর্ড সাদা তাই অনেক বিষয় বোঝা যায় না। সূত্রগুলো যখন বোঝানো হয় তখন সাউন্ডের জন্য শুনতে পাই না। আম্মু জোর করে দেখতে বসায়। হোমওয়ার্কের ওপর নাম্বার দেওয়া হবে নাকি ওইজন্য। এর চেয়ে ইউটিউবে লেসন দেখা মনে হয় অনেক বেটার। টোটালি ভালো লাগে না।’
ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী তাসফিয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বললো, ‘আমি তো টিভিই দেখি না। ভাইয়া বলছে টিভিতে নাকি ক্লাস করাবে। আমার দেখতে ইচ্ছে হয় না। এখন স্কুল বন্ধ। তাই একটু একটু করে বাসায় নিজে নিজে পড়ি। না পারলে ভাইয়া দেখিয়ে দেন।’
তাসফিয়ার মতো আরও অনেকেই আছে যাদের বাসায় টিভিই নেই। আবার দেখিয়ে দেওয়ার মতন অভিভাবকও নেই। তারা এসব ক্লাসে অংশ নিতে পারছে না।
নাসিরাবাদ বালক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানালো, ‘টেলিভিশনের এই ক্লাসগুলোতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় না। সময় কম। মাত্র ২০ মিনিট। আমার বুঝতে একটু সময় লাগে। আমার মত অনেকে আছে যারা পড়া একটু দেরি করে বুঝতে পারে। না বোঝার কারণে বাসার কাজ (হোমওয়ার্ক) যা দিচ্ছে তা করতে পারছি না। বাসায় টিচার নাই তাই পড়াগুলো জমছে। চিন্তা হচ্ছে আমাদের এই বাড়ির কাজের ওপর নাম্বার দেয়া হবে। কিছুই পারবো না।’
এই শিক্ষার্থীর অভিভাবক হোসাইন আহমদ বলেন, ‘ক্লাস শুরু হয়েছে ২৯ মার্চ। এ কয়দিনে কী পাঠদান হচ্ছে কেউ কি মনিটরিং করছে? গতকালের একই ব্যবহারিক পুনঃপ্রচার। নবম শ্রেণীর ইংলিশ প্রথম পত্র শুরু হলো কিন্তু স্ক্রিন ব্ল্যাক। তাই পাঠদান শেষ। নির্ধারিত ক্লাস হয় না। ক্লাস দেখে খুব ক্লিয়ার বোঝা যায়, অদক্ষ শিক্ষকদের মাধ্যমে টেলিভিশনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তারা বিষয়ভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা করতে না পারায় শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারছে না। যেসব হোমওয়ার্ক দেওয়া হচ্ছে তাও করতে পারছে না। নরমালি ইউটিউবে অনেক লেসন থাকে সেইসব এটার চেয়ে অনেক ভালো। এটা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের ভাবা উচিত। বাচ্চাদের ভালোর জন্য করলাম অথচ তারা সুফল পেলো না তাইলে এই প্রজেক্টের প্রয়োজনটা কী?’
তিনি আরও বলেন, ‘নবম শ্রেণীর মানবিক বিভাগের পাঠদান কেবল শুরু হয়েছে দেখলাম। কমার্স বিভাগের কিছু পাঠদান না হলে এ কার্যক্রম সবার জন্য হল কি? শুরুতেই তাদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে না পারলে পরে তা তৈরি হবে?’
একই প্রসঙ্গে আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সো কলড, একেবারেই গতানুগতিক। মানুষ একজন আসে, দাঁড়িয়ে থাকে, কিছু কথা বলে চলে যায়। একেবারে গৎবাঁধা কিসিমের। এরকম টিচার হলে তো এমনিতেও বাচ্চারা আগ্রহ পাবে না। এটা অনলাইন ক্লাস কিন্তু সেরকম কিছুই নাই। একইভাবে মুখস্থবিদ্যার মতন কথা বলে, আবার চলে যায়।’
এর সাথে যোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘এখন যে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস হয় তা এর চেয়েও অনেক ভালো। একটা লেসনের জন্য অনেক সময় দিতে হয়। স্লাইড রেডি করে বাচ্চাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারলে বাচ্চাদের শেখানো যায়। কিন্তু এখানে কিছুই নাই। এমন হলে কি শিক্ষার্থীরা আগ্রহ নিয়ে বসে থাকবে?’
মুসলিম হাই স্কুলের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে ক্লাস নিচ্ছে। খারাপ না। তাও বাচ্চারা যতক্ষণ দেখে ভালো। তারপরও চুপচাপ বসে থাকার চেয়ে এটা তো খারাপ না! একটা মাধ্যমে অন্তত ব্যস্ত আছে পড়াশোনা নিয়ে। অভিভাবকদের আরেকটু সচেতন হতে হবে যাতে বাচ্চারা ক্লাসগুলো নিয়মিত দেখে।’
অন্যদিকে, প্রাক প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের এ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই তবে অভিভাবকদের পরামর্শ আরও দক্ষতার সাথে যাতে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
টেলিভিশনের ক্লাস কেমন লাগে প্রশ্ন করা হলে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার ভালো লাগে শুধু ইংলিশ বুঝি না। টিভির টিচার সব ইংলিশে কথা বলেন।’
একই প্রশ্নে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নিঝুম বলেন, ‘ভালো লাগে। বিজ্ঞান আর অংকের ক্লাসগুলো আমার আগেই শেষ করা ছিল তাই বুঝতে সমস্যা হয় নাই। ইংরেজিটা একটু বুঝতে পারি না। খুব তাড়াতাড়ি বলে তো তাই।’
এ দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক কামরুন নাহার বলেন, ‘সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কিন্তু যে সকল শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছেন আমার মনে হয় তাদের আরও অভিজ্ঞ হওয়া উচিত। তাছাড়া মাধ্যমিকের বাচ্চাদের মত প্রাথমিকের বাচ্চারা কুইকলি পড়া ক্যাচ করতে পারে না। সেক্ষেত্রে সময়টা বাড়ানো প্রয়োজন বলে আমার অভিমত। এর বাইরে আসলে বেশি কিছু বলার নাই।’
এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর ড. কাজী গোলাম মাওলা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের এখানকার একটা দিক দুর্বল ছিল— চট্টগ্রাম বোর্ডে দ্বীপ এবং পাহাড় আছে। দ্বীপ বলতে সন্দ্বীপ এবং হাতিয়া। পাহাড় বলতে পার্বত্য অঞ্চল। দ্বীপাঞ্চল থেকে জানানো হয়েছিল তারা সংসদ টিভি ভালোমত দেখতে পারছে না। তখন আমরা সেখানকার প্রশাসনের সাথে কথা বলে, যোগাযোগ করে সেই সমস্যা সমাধান করি। এখন আমার কাছে যতগুলো খবর এসেছে তার প্রতিটি ইতিবাচক। নেতিবাচক একটা দিক এসেছে সেটা হল টিভির রিমোটের দখলদারিত্ব মায়েরা ছাড়তে চায় না। আর এটাই প্রবলেম। আর সবচেয়ে ভালো ব্যাপার পাচ্ছি, ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে সবাই সংসদ টেলিভিশনের ক্লাস দেখছে। শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষকরাও দেখছেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গৎবাঁধা না। আমরা একটা ক্লাসকে দুইবার দেখাই না। যে সময় আমরা এই রেকর্ডিংয়ের কাজ করাচ্ছি, যে মানুষদের দিয়ে করাচ্ছি, এই স্বল্পতা নিয়ে এই দুর্ভাগ্যজনক সময়ে এর চেয়ে ভালো পারফর্মেন্স শো করতে পারছি না। সেরা শিক্ষকদের আনতে পারছি না। যারা আছে তাদের দিয়ে কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। তাদের মধ্যে সবাই যে ভালো করছে তা দাবি করি না। কারণ স্বাভাবিক সময়ে যদি হতো তাহলে সেরাগুলো দিতে পারতাম। এই করোনায় কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে সকলকে।’
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ঘাটতি পুষিয়ে নিতে মাউশির এই উদ্যোগকে যথাযথভাবে মনিটরিং এবং দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করার ওপর গুরুত্বারোপ করে শিক্ষাবিদ ও সাবেক অধ্যক্ষ ড. আনোয়ার আলম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই সময়ে শিক্ষার্থীদের যথাযথ অর্থে পাঠদানের লক্ষ্যে এ প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে। তাহলে সেখানে যাতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ বা মিডিয়াতে পড়ানোর মতন দক্ষতা আছে, তাদেরকে অবশ্যই যুক্ত করতে হবে। যখন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক অভিযোগ করবে তখন কোনোভাবে চালিয়ে যাওয়ার জন্য এই প্রজেক্টগুলো নেওয়া হয়েছে তা তো বলা যাবে না।’
এর সাথে যোগ করে তিনি বলেন, ‘আমি যখন বলবো বাচ্চারা এই মাধ্যমে পড়বে তাহলে ভালো শিক্ষক কেন পাওয়া যাবে না? ঢাকায় অনেক ভালো ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে ভালো শিক্ষকও রয়েছেন। মাউশি যদি নির্দেশ দেয় তাহলে শিক্ষকরা অবশ্যই আসবেন। এখানে যখন একটা উদ্দেশ্য নিয়ে প্রজেক্ট করা হয়েছে। তখন সেখানে আন্তরিকতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা থাকতে হবে। মনিটরিং করতে হবে। প্রজেক্ট একটা নিলাম আর নয়ছয় করে চালিয়ে নিলাম এটা লেইম এক্সকিউজ। কোনোভাবে চালিয়ে নেওয়া কিন্তু মাউশির জন্য গ্রহণযোগ্য অজুহাত হতে পারে না।’
এসআর/সিপি