টিকা নিয়ে নতুন ফ্যাসাদে চবি শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম। লকডাউনে গ্রামের বাড়িতে আটকে থাকায় নিকটস্থ কেন্দ্রে করোনার টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু হঠাৎ লকডাউন তুলে নেওয়ায় বিভাগ থেকে অসমাপ্ত পরীক্ষার নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ফলে তাকে টিকা না দিয়েই ক্যাম্পাসে ফিরতে হচ্ছে। এখন তিনি নির্ধারিত কেন্দ্রে টিকা কিভাবে দেবেন তা নিয়ে চিন্তিত।

রিয়াজ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার বাড়ি ঢাকার ধামরাইয়ে। লকডাউন থাকায় আমি নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঠিকানায় রেজিস্ট্রেশন করেছি। এখন আবার বিভাগ থেকে বলতেছে পরীক্ষার রুটিন দেবে। এখন পরীক্ষা চলাকালে যদি টিকার ম্যাসেজ আসে, তাহলে ঢাকায় গিয়ে কিভাবে টিকা দেবো?’

একই সমস্যায় পড়েছেন ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহিদুল ইসলাম। তিনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি ১৪ জুলাই কুমিল্লায় প্রথম ডোজ দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা আসায় আমি চট্টগ্রামে চলে এসেছি। এখন যদি পরীক্ষার মধ্যেই দ্বিতীয় ডোজের ম্যাসেজ আসে তাহলে কী করবো?’

তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে বা চট্টগ্রামে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতো তাহলে ভালো হতো।’

শুধু রিয়াজ বা শাহিদই নন, নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে করোনার টিকার রেজিস্ট্রেশন করতে পারলেও এবার সেই টিকা দেওয়া নিয়ে নতুন বিড়ম্বনায় পড়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু শিক্ষার্থী। গ্রামের বাড়িতে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঠিকানা দিয়ে ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন করে এখন পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে চলে আসায় এই বিড়ম্বনায় পড়েছেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানান, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই তাদের নিজ নিজ এলাকার নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঠিকানা দিয়ে ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। তাই স্বভাবতই ভ্যাকসিন প্রদানের তারিখে তাদের নির্ধারিত কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে টিকা নিতে হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্থগিত থাকা পরীক্ষা নেয়ার জন্য বিভাগগুলোকে অনুমতি দেয়ায় বিভিন্ন বিভাগ পরীক্ষার রুটিন দিতে শুরু করেছে। তাই সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের চট্টগ্রাম ফিরতে হচ্ছে দেশের নানান প্রান্ত থেকে। এখন ভ্যাকসিন নেওয়ার তারিখ এলেও একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে ওই পরিস্থিতিতে টিকা গ্রহণ সম্ভব হবে না।

শিক্ষার্থীদের দাবি, পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এখন টিকা খুব লিমিটেড। যে যেখানে রেজিষ্ট্রেশন করেছে, টিকা সেখানেই দিতে হবে। সেখানে টিকা না দিলে দুই ডোজ টিকা দেওয়ার যে ভ্যাকসিনেশন কার্ড দেওয়া হয়, সেটা পাবে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর এসএম মনিরুল হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘যদি শিক্ষার্থীদের বিশাল একটা অংশ নিজ এলাকায় টিকা না দিয়ে পরীক্ষা দিতে চলে আসে, তাহলে তাদের টিকা হাটহাজারীতে ট্রান্সফার করা যায় কিনা আমরা সেটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।’

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!