‘টার্গেট রিকশার নারী যাত্রী’ নকল স্বর্ণের বার দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় আসল স্বর্ণালংকার

গ্রেপ্তার তিনজনই পেশাদার প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। প্রতারণার বাহন হিসেবে ব্যবহার করে আসছে রিকশা। তাদের টার্গেট পড়েন শুধুমাত্র নারীরা। কোনো নারী তাদের রিকশায় উঠলে কৌশল আঁটেন প্রতারণার। চলন্ত রিকশায় যাওয়া পথিমধ্যে সামনে-পেছনে থাকেন তাদের অন্য রিকশাগুলো। একপর্যায়ে তাদের একজন রাস্তায় কুড়ে পাওয়া একটি নকল স্বর্ণের বার পেয়ে তাদের অন্য রিকশার যাত্রীদের লোভ দেখিয়ে সস্তায় নকল স্বর্ণটি বিক্রি করার কাকুতি মিনতি করেন।

সরল বিশ্বাসে একপর্যায়ে নারী যাত্রীর সঙ্গে থাকা গলার চেইন, আংটি ও নগদ টাকা দিয়ে কিনে নেন নকল স্বর্ণটি। কাজ শেষ হলেও গন্তব্যে যাওয়ার মাঝপথে নামিয়ে দেয় ভূক্তভোগীদের। এ ঘটনার পর ভূক্তভোগী এক নারীর অভিযোগের পরিপ্রক্ষিতে তিন প্রতারককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার সিনেমা প্যালেস মোড় থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় রাতেই একটি মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগী শুক্লা দে। এসময় একটি রিকশা ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার নিয়ামতপুর গ্রামের হাবিব মেম্বারের বাড়ির মৃত আব্দুল সালামের পুত্র মো. জালাল মিয়া (২৮), একই জেলার মুরাদনগর থানার আড়ালিয়া গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মৃত কালা মিয়ার পুত্র মো. কবির হোসেন (৩২) এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মেখল হরি গ্রামের পোদ্দারের বাড়ির মৃত নন্দলাল চৌধুরীর পুত্র মুধুসুদন চৌধুরী (৬৫)।

পুলিশ জানায়, গত ২৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্যকর্মী শুক্লা দে কর্মস্থল শেষ করে নগরের দামপাড়া ওয়াসা মোড় থেকে রিকশাযোগে বাসায় ফিরছিলেন। ওই সময় তার সঙ্গে ছিলেন গোপী বিশ্বাস নামে আরেক নারীও। ওইদিন কোতোয়ালী থানার মোড় থেকে ৭০ টাকায় ভাড়ায় গোল পাহাড় এলাকায় রওনা করেন। পথিমধ্যে সিডিএ বিল্ডিংয়ের গেইটের একটু সামনে পৌঁছামাত্র চলন্ত রিকশার সামনের চাকার সামনে রাস্তার উপর হতে প্যাকেটে মোড়ানো একটি স্বর্ণের বার পেয়ে পকেটে নিয়ে নেয়।

পরে ওই র্স্বণটি রিকশা থাকা শুক্লা দে সরল বিশ্বাসে তার কথায় রাজি হয়ে সঙ্গে থাকা এক জোড়া তিন আনা ওজনের কানের দুল, একটি ৪ আনা ওজনের আংটি এবং ও নগদ ৪০০ টাকা দিয়ে প্যাকেট করা স্বর্ণের বারটি নিয়ে নেয়। পরে রিকশাটি পথিমধ্যে নষ্ট হয়েছে বলে যাত্রীকে নামিয়ে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় তারা। এ ঘটনার পর ভূক্তভোগী ওই নারী বাসায় গিয়ে বুঝতে পারেন স্বর্ণের বারটি নকল। পরে থানায় এসেই একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বাদিনির বর্ণনা মতো তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তার তিনজনই পেশাদার প্রতারক। নগরে রিকশা চালকের আড়ালে ৭ থেকে ৮ বছর ধরে প্রতারণা করে আসছিল তারা। এ ঘটনায় তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করেন ওই নারী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা প্রতারণা বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

মুআ/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!