টাকা সরানোর আশঙ্কায় এস আলমের ৮ কোম্পানির একাউন্ট অবরুদ্ধ করতে চিঠি

টাকা সরানোর শঙ্কায় চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগ্রুপ এস আলমের আট কোম্পানির ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এজন্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) আট কোম্পানির হিসাব অবরুদ্ধের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের এসব কোম্পানির নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত হিসাবগুলোতে বিদ্যমান অর্থ যেকোনো সময় স্থানান্তর করা হতে পারে। যে কারণে হিসাবগুলো অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

বিএফআইইউতে পাঠানো দুদকের ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান করছে দুদক। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায় যে, এস আলম গ্রুপভুক্ত ৮ প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত হিসাবগুলোতে বিদ্যমান অর্থ যেকোনো সময় স্থানান্তর করা হতে পারে। সেজন্য এস আলম গ্রুপভুক্ত ওই আটটি প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন তফশিলি ব্যাংকে পরিচালিত হিসাবগুলো অবরুদ্ধ বা ফ্রিজ করা প্রয়োজন।

এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর কাঁচামাল সংকটের কারণ দেখিয়ে এস আলম গ্রুপের আটটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বন্ধ ঘোষণা করা কারখানাগুলো হলো—এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ, এস আলম ব্যাগ, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড, ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, স্টিল খাতের এনওএফ, চেমন ইস্পাত, এস আলম স্টিল এবং গ্যালকো।

এগুলোর মধ্যে গ্যালকো স্টিল ঢাকার নয়াবাজারে অবস্থিত। অন্য সবগুলোর ঠিকানা চট্টগ্রামে। এসব কারখানায় প্রায় ১২ থেকে ১৪ হাজারের মত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা কর্মরত আছেন।

হাসিনা সরকারের সময় সর্বোচ্চ সুবিধাভোগীদের একজন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ। তার বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থপাচার, কর ফাঁকির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। সাইফুল আলম মাসুদ সরকার পতনের পর থেকেই বিদেশে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুদকও অর্থপাচারের একটি অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে।

এস আলমের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের বিষয়টি সামনে আসে ২০২৩ সালের অগাস্টে। তখন এ বিষয়ে নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান শুরু হলেও তা আর এগোয়নি। সরকার পরিবর্তনের পর গত ১৮ আগস্ট আপিল বিভাগের একটি আদেশের কপি পায় দুদক, সেখানে অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। আপিল বিভাগের ওই আদেশে বলা ছিল, অভিযোগটি যথার্থ নয়। তবে দুদক বা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ চাইলে অভিযোগটি অনুসন্ধান করতে পারে। এরপরই দুদক অনুসন্ধানে নামে।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm