রাঙামাটি জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র বনরূপায় টাকা নিয়ে বিবাদে এক রেস্টুরেন্ট কর্মীর ছুরিকাঘাতে ইজাজুল হক রাব্বি (৩৫) নামের এক যুবক খুন হয়েছেন। এই ঘটনায় আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মীর আবু তোহিদ। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও ঘটনার বিবরণ জানাতে বিকালেই সংবাদ সম্মেলন করেন এসপি।
ছুরিকাঘাতে নিহত রাব্বি শহরের বনরূপা কাটাপাহাড় এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি জুতার দোকানদার।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত সেলিম মাহমুদ (৩৪) বনরূপার একটি রেস্টুরেন্টের কর্মী। তিনি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরমধুয়া ইউনিয়নের মো. মাহমুদের ছেলে।
আসামির বরাত দিয়ে জেলা পুলিশ সুপার জানান, ‘ছুরিকাঘাতে নিহত রাব্বি ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত সেলিম দু’জনই পূর্বপরিচিত ও তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল। রাব্বির কাছ থেকে টাকা পেতেন সেলিম। শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটায় তাদের দু’জনের মধ্যে টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এই সময় একপর্যায়ে সেলিম মাহমুদকে মারধর করে রাব্বি। পরে সেলিম তার বাসায় চলে যায়। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে রাব্বি আবারও ফোন করে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় সেলিমকে এবং পুনরায় তাদের কথা কাটাকাটি হয়। শনিবার ভোর ৫টার দিকে সেলিম ছুরি দিয়ে রাব্বিকে ছুরিকাঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় বনরূপা বাজারের নৈশপ্রহরী মো. আমির হোসেন (৩৫) এগিয়ে আসলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।
আমির হোসেন বর্তমানে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খুনের ৬ ঘণ্টার মধ্যে দুপুর ১১টায় সেলিম মাহমুদকে রাঙামাটি শহর এলাকা থেকে আটক করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার আদালতে তোলা হবে বলে জানান তিনি।
পুলিশ সুপার আরও জানান, টাকা-পয়সা নিয়ে বিবাদে একজন আরেকজনকে খুন করেছে। আমরা ঘটনার পর সকাল ১১টার দিকে আসামিকে আটক করেছি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে নিহত রাব্বি ২০২১ সালে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছিল। তাই হত্যার পেছনে অন্য ঘটনা আছে কী-না, সেটি উদ্ঘাটনে আসামিকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আসামি সেলিম মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে রাঙামাটিতে চাকরির সুবাদে অবস্থান করছেন, পরিবারের সঙ্গেও তার যোগাযোগ নেই। এই ব্যাপারে মামলা রুজুসহ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, রাঙামাটিতে আমরা কোনোভাবেই ‘কিশোর গ্যাং’ সিস্টেম হতে দেবো না। এসব গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ কঠোর অবস্থানে বদ্ধপরিকর।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপারের সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মারুফ আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা) শাহনেওয়াজ রাজু ও কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আমিন উপস্থিত ছিলেন।
ডিজে