দেশব্যাপী আন্ডরওয়ার্ল্ডের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড (ক্যাসিনো, মদ, জুয়া, পতিতাবৃত্তি, অবৈধ টেন্ডার বন্টন) নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জাানিয়েছে দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ।
চলমান অভিযানকে ইতিবাচক ও জনমনে সরকারের ভাবমূর্তিকে উজ্জল করছে উল্লেখ্য করে ক্যাব চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দ বলছেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনে মদ, জুয়া, অবৈধ টেন্ডার, ব্যবসায়-বানিজ্য বন্টনের মতো দুর্নীতির বিস্তার, ক্লাবগুলির আর্থিক সংস্থানের জন্য জুয়ার আসর বসানোর বিষয়গুলির বিস্তার পুরো ক্রীড়াঙ্গনের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ‘কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না’ মর্মে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যেই দিয়ে মূলত সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, অনিয়ম দূর ও জবাবদিহিতার গুরুত্বকে দেশবাসীকে আশ্বান্বিত করেছে।’
আন্ডরওয়ার্ল্ডের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ক্যাব চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে কিছু রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রেক্ষিতে যে লোমহর্ষক চিত্র বের হয়ে আসছে, তা দুর্নীতি, সিন্ডিকেট ও অনিয়মের ভয়াবহ চিত্র মাত্র। রাজনৈতিক মদদে ও পরিচয়ে আন্ডার ওয়ার্ল্ডে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অনিয়ম, দুর্নীতির শেকড় নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এর পরিণাম দেশের অর্থনীতি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ভয়াবহ ও সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব পুরো জাতিকে গ্রাস করবে।’
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনে অসাধু ব্যবসায়ীদের অধিক ঝুঁকে পড়া, অনিয়ম, জুয়া ও টেন্ডার বন্টনসহ যে ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে; তা দেশে সুশাসন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও দেশে ন্যায্য ব্যবসায় বানিজ্যে বিস্তারে বড় প্রতিবন্ধক। অনিয়ম ও অপকর্ম করতে একটা শ্রেণি রাজনৈতিক ক্ষমতাকে বারবার ব্যবহার করছে, প্রশাসন অনেক জায়গায় নীরব দর্শক ছিলেন এবং রাজনৈতিক সম্পৃক্ততায় ও ক্ষমতার অবস্থানকে পুঁজি করে জনস্বার্থের বিষয়গুলি জলাঞ্জলি দিয়ে নিজেদের সম্পদ তৈরিতে রাজনীতিকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে। আর এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে স্বাভাবিক রাজনৈতিক চর্চা বাঁধাগ্রস্ত হবে, ন্যায্য ব্যবসার পরিবেশ, সুশাসন, জবাবদিহিতা হুমকির মুখে পড়বে এবং দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার দেশের সিন্ডিকেটের প্রসার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে।’
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘সাম্প্রতিক অভিযানের ফলে যে উদ্বেগজনক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় এনে কঠিন দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা প্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেশাগত শুদ্ধাচার, নিরপেক্ষতা ও উৎকর্ষতা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে দল নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত করে ঢেলে সাজাতে হবে।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান।
এএইচ