জুনে শেষ লালদিয়া লাইটারেজ জেটির কাজ, কমবে নগরের যানজট
চট্টগ্রামের পতেঙ্গার লালদিয়ার চরে শুরু হয়েছে লালদিয়া লাইটারেজ জেটির কাজ। দীর্ঘদিন ধরে উচ্ছেদ জটিলতায় আটকে থাকার পর সম্প্রতি উচ্ছেদ অভিযান চলার পর সেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে লাইটারেজ জেটি। উচ্ছেদের পর উদ্ধার হওয়া ২৫ একর জায়গায় নির্মাণ করা হবে ১০ জেটি। তার পাশেই ইনকনট্রেড ডিপোর (আইসিডি) পেছনে নির্মাণ করা হচ্ছে আরো পাঁচটি জেটি।
১৫টি জেটির নির্মাণ কাজ শেষে অপারেশনাল কাজ শুরু করা গেলে চাপ কমবে চট্টগ্রাম শহরের অভ্যন্তরে বাংলাবাজারে অবস্থিত লাইটার জেটির উপর। এতে চট্টগ্রাম শহরে যানজট অনেকটা কমে আসবে বলে মনে করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর সূত্র জানায়, আমদানিকৃত খাদ্যশস্য, স্ক্র্যাপ, সিসেন্ট ক্লিংকার, পাথরসহ খোলা পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে লাইটারেজ জাহাজে খালাস হয়। প্রায় ৯০ ভাগ কার্গো খালাস হয় সেখানেই। বহির্নোঙ্গরে খালাসকৃত প্রায় ৯০ ভাগ পণ্য পুনরায় খালাস হয় বাংলাবাজার লাইটার জেটিতে।
ওই জেটিগুলোর অবস্থান চট্টগ্রাম শহরের অভ্যন্তরে হওয়ায় প্রতিদিন কয়েক হাজার ট্রাক, কাভার্ভভ্যান চলাচল করে। নগরে দিনের বেলায় ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকার কথা থাকলেও বাংলাবাজার লাইটার জেটি থেকে পণ্য লোড-আনলোড করতে আসা ট্রাকগুলো চট্টগ্রাম শহরের রুটগুলো ব্যবহার করায় যানজট লেগে যায়।
সূত্র জানায়, প্রতি বছর বাল্ক ক্যারিয়ারের সংখ্যা ১২ শতাংশ করে বাড়লেও সেই তুলনায় বাড়েনি লাইটার জেটির সংখ্যা। অন্যদিকে বাংলাবাজারে যেসব জেটি রয়েছে সেগুলো অবকাঠামোগত দিক দিয়ে ঘাট হিসেবেই বিবেচনা করা যায়। সেই বাস্তবতায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লাইটার জেটি নির্মাণের দিকে নজর দিয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি ম্যানেজার (এস্টেট) জিল্লুর রহমান বলেন, লালদিয়ার চরে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর পর উদ্ধার হয় ২৫ একর জমি। এখন সেখানে বাউন্ডারি ওয়াল (সীমানা প্রাচীর) নির্মাণের কাজ চলছে। বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা হচ্ছে লাইটার জেটি। আগামী বছরের জুন মাস নাগাদ জেটি নির্মাণের কাজ শেষে অপারেশনাল কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
জিল্লুর রহমান বলেন, লাইটারেজ জেটি নির্মাণের পাশাপাশি সেখানে ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। সেখানে অন্তত ৩ শ ট্রাক রাখা যাবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরে ট্রাকগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে সড়কের উপরেই থাকে। ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ হয়ে গেলে ট্রাকগুলো জেটি থেকে পণ্য নিয়ে আউটার রিং রোড, টোল রোড হয়ে সরাসরি চট্টগ্রাম শহর এড়িয়ে আসা যাওয়া করতে পারবে।
বন্দর সূত্র জানায়, একটি লাইটার জাহাজ ১০ হাজার টন পণ্য বহন করে। লালদিয়ায় ১৫ জেটিতে একসাথে এক লাখ ৫০ হাজার টন পণ্য লোডিং-আনলোডিং করা যাবে। এর ফলে আমদানি রপ্তানি-বাণিজ্য আরো গতিশীল হবে। সেই সাথে আউটারে মাদার ভ্যাসেলে গড় অপেক্ষমাণ সময়ও কমে আসবে। অন্যদিকে যানজটের নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে চট্টগ্রাম নগরবাসী।
প্রসঙ্গত দীর্ঘদিন নানা জটিলতায় আটকে থাকার পর গত ২২ জুলাই দুইদিনব্যাপী লালদিয়ার চরে চালানো হয় উচ্ছেদ অভিযান। ওই এলাকায় প্রায় ১ হাজার ৭০০ পরিবার বসবাস করলেও কর্ণফুলী নদীর তীর সংলগ্ন ১৩০ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। সেখানেই নির্মিত হচ্ছে লালদিয়া লাইটারেজ জেটি।
এসসি/এসএস