জামিনে বেরিয়ে গেলেন ভুল অপারেশন করা লায়ন্সের সেই ডাক্তার, মুচলেকা ২ হাজার

নেত্রনালীর বদলে চোখের ছানি অপারেশন

নেত্রনালীর অপারেশনের বদলে এক পোশাককর্মীর চোখের ছানি অপারেশন করে কৃত্রিম লেন্স লাগিয়ে দেওয়ার মামলায় চট্টগ্রামের লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মিজানুল হককে দুই হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

ডা. মিজানুল হকের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযুক্ত ডা. মিজানুল হক লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের কনসালট্যান্ট। তিনি চোখে কৃত্রিম লেন্স বসানোর ফ্যাকো সার্জারিতে প্রশিক্ষিত বলে জানানো হয়েছে লায়ন্স হাসপাতালের ওয়েবসাইটে।

গত শনিবার (৮ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ মিস্ত্রিপাড়ার তরুণী হালিমা আক্তার (১৯) খুলশীতে অবস্থিত চট্টগ্রাম লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালে গিয়েছিলেন নেত্রনালীর অপারেশন করাতে। কিন্তু লায়ন্সের ডাক্তাররা সেই হালিমার চোখে অপারেশন করে বসিয়ে দিয়েছেন লেন্স। সেই ভুল ধরা পড়ে অপারেশনের পর। ভুল অপারেশনে রোগীকে চোখে লেন্স বসিয়ে দেওয়ার পর অনুশোচনা কিংবা ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা, উল্টো সেই ভুল অপারেশনের টাকা দাবি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে এই বিষয় নিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপরই চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে বলে জানায় লায়ন্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এই ঘটনায় রোববার (৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের খুলশী থানায় করা এই মামলায় ডা. মিজানুল হককে আসামি করা হয়। মামলায় অজ্ঞাত আরও তিন থেকে চারজন ডাক্তার ও নার্সকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগীর ভাই আবুল হোসেন আকাশ বলেন, ওই হাসপাতালে হালিমা নামে ৩০ বছর বয়সী আরেক রোগীর চোখে লেন্স লাগানোর কথা ছিল। কিন্তু চিকিৎসক তার বোনের চোখে লেন্স লাগিয়ে দিয়েছে।

মামলার বাদী আবুল হোসেন আকাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার বোনের চোখে ভুল অপারেশন করে লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের ডাক্তার। এরপর তারা কোন অনুশোচনা তো দূরে থাক বরং আমাদের নানান হয়রানি শুরু করে। ভুলে যে অপারেশন তারা করে সেই অপারেশনের ফি আদায়ের জন্য আমার মা-বোনকে চাপ দেয়।’

আবুল হোসেন আকাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘পরে থানায় যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে কথা বলেছেন। উনারা বলেছেন একটা ভুল হয়ে গেছে। বিষয়টা উনারা দেখবেন। দেখুন আমার কোন টাকা-পয়সা দরকার নাই। আমি শুধু চাই আমার বোনের চোখের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। সে বিষয়টা উনারা নিশ্চিত করবেন।’

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!