জামাল ভূঁইয়ার চট্টগ্রাম আবাহনীর সামনে পরাস্ত ‘তরুণ হাতি’

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ

নিজেদের প্রথম ম্যাচে মোহনবাগানকে হারিয়ে বেশ চমকের সৃষ্টি করেছিল ইয়াং এলিফ্যান্টস। তারা অপেক্ষায় ছিলেন স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনীকেও চমকে দিবে। কিন্তু উল্টো ম্যাচের শুরুতেই লাওসের দলটিকে চমকে দেয় মারুফুল হকের শিষ্যরা। ম্যাচের নয় মিনিটে লুকার পাস থেকে চিনেন্দুর ম্যাথিউয়ের গোলে লিড নেয় আকাশী-হলুদরা। প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করা নাইজেরিয়ান এই ফুটবলার এই ম্যাচেও লিড এনে দেন স্বাগতিকদের। এক পর্যায়ে পিছিয়ে থেকেও দুর্দান্ত এক জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে চট্টগ্রাম আবাহনী। সেই সাথে দুই জয়ে টুর্নামেন্টের শেষ চারের পথে এগিয়ে গেছে আয়োজকরা।

প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়নরা এবারের তৃতীয় আসরে যেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই খেলে চলেছে। প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন টিসি স্পোর্টসকে ৪-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেও উড়ন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো। জয়ের নায়ক জামাল ভূঁইয়া একক নৈপুণ্যে দেখিয়ে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেছে তার দলের।

প্রথমে পাওয়া লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি আবাহনী। আবাহনী এগিয়ে যাওয়ার পাঁচ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত ফ্রি-কিক থেকে ইয়াং শিবিরকে সমতায় ফেরান আফিক্স আই। এর মাঝে ২২ মিনিটের মাথায় পাল্টা আক্রমণে ফ্রি-কিক আদায় করে নিয়ে জামাল ভূঁইয়ার বুলেট শট আটকে দেয় লাওসের দলের গোলরক্ষক। ম্যাচে তখন সমতা। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ঠাসা ম্যাচটাতে ৩৩ মিনিটে এগিয়ে যায় ইয়াং এলিফ্যান্টস। আবাহনীর রক্ষণের হাস্যকর দুর্বলতার সুযোগটা কাজে লাগিয়ে লিড নেয় দলটি। জনের পাসটা ডি বক্সের ভেতরে ঠিকমতো ঠেলতে ভুল করলে সহজ সুযোগ থেকে বলটা জালে জড়াতে ভুলেননি সামঝাই। এই লাওস ফুটবলারই মোহনবাগানকে জোড়া আঘাতে জর্জরিত করেছিল।

২-১ এ পিছিয়ে থাকা মারুফুল হকের শিষ্যরা যেন দ্বিতীয়ার্ধে তেতে উঠে হাজারো দর্শকের সামনে। এবার এগিয়ে আসেন জামাল ভূঁইয়া। তার পাস থেকে হেডে চট্টগ্রাম আবাহনীকে সমতায় ফেরান রাশিয়ান ফুটবলার লুকা। আগের ম্যাচেও জালের সন্ধান পেয়েছিলেন লুকা।

সমতায় ফিরেই যেন আর ফিরে তাকাতে হয়নি আয়োজকদের। পুরো ম্যাচের বল নিয়ন্ত্রণ নিজেদের নাটাইয়ে রেখে আক্রমণের পর আক্রমণ সাজিয়ে গেছেন। তার সফলতা এলো তাৎক্ষণিকভাবে। ৭২ মিনিটে আবার লিড নিলো চট্টলার দলটি। রহমত মিয়ার থ্রোটা ডি বক্সের ভেতরে জটলায় পড়ে বাইরে চলে আসলে বাঁ পায়ের বুলেট শটে বল জালে জড়ান জামাল ভূঁইয়া। তাতেই ৩-২ ব্যবধান গড়ে দেয় আবাহনী।

স্কোরটা যে কখনই স্বস্থির না সেটা উপলব্ধি করেই আক্রমণ বজায় রাখে আয়োজকরা। ৭৮ মিনিটে ব্যবধানটাকে নিরাপদ অবস্থায় নিয়ে যায় তারা। কর্নার থেকে গোল পেয়ে যান জামাল ভূঁইয়া। সঙ্গে জয়টাও নিশ্চিত করে ফেলেন। দ্বিতীয় জয়ের স্বাদ নিয়েই মাঠ ছাড়ে সমর্থকরা।

টানা দুই জয়ে সেমির পথটা আরও পাকাপোক্ত করে চট্টগ্রাম আবাহনী। শেষ ম্যাচে ড্র করলেও সেমি ফাইনাল খেলবে আয়োজকরা। পিছিয়ে থেকে দুর্দান্ত ফুটবল খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও পকেটে ভরেছেন অধিনায়ক জামাল। সেই স্বস্থির কথাও জানালেন, ‘প্রথমার্ধে খারাপ খেলছি। পরের অর্ধে দারুণ খেলেছি। চট্টগ্রামে এমন ভালো খেলে ভালো লাগছে।’

শেষ ম্যাচে মোহনবাগানের সঙ্গে খেলবে চট্টগ্রাম আবাহনী ২৫ অক্টোবর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!