জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রামে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভা

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতর্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রামে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের আলোচনা সভা 1

সোমবার (২৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক জিনাত সোহানা চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দেবাশীষ পাল দেবুর সঞ্চালনায় ‘বিএনপি +জামায়াত +জঙ্গি +বঙ্গবন্ধুর ঘাতক=বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তি এই নেক্সাস রুখবে ঐক্যবদ্ধ তরুণ প্রজন্ম’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভাপতির বক্তব্যে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চট্রগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক জিনাত সোহানা চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি আজও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এই অপশক্তির মোকাবেলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা, গুজব, অপপ্রচার, অপরাজনীতি রোধে তরুণদের সচেতন হতে হবে। বঙ্গবন্ধু আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তার কর্ম, নীতি, আদর্শ ও দর্শন বেঁচে থাকবে অনন্তকাল।’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনুপম সেন বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত দেশের শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশকে বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তি মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে অগ্রণী ভুমিকা রাখতে হবে। সরকারের বর্তমান উন্নয়ন প্রচার ও জঙ্গিবাদমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রশংসনীয় ভুমিকা রাখছে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন। বিশেষ করে মাদ্রাসায় জয়বাংলা, জাতীয় সঙ্গীত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ করে মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার দূরূহ সংগ্রাম করে যাচ্ছে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন।’

সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একাত্তরে আমরা ভৌগলিক স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তির পথ রুদ্ধ করা হয়। দীর্ঘ পথপরিক্রমার পর বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ আজ বিশ্ব অর্থনীতিতে ৩২তম দেশের মর্যাদায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। শোষণহীন সমাজ গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু এক সুদীর্ঘ সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সবসময় তিনি শোষণের বিরুদ্ধে, বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং রুখে দাঁড়িয়েছেন শোষকদের বিরুদ্ধে।’

সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, ‘বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রগতি সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে। উন্নয়নের সুফল দেশের সকল মানুষ ভোগ করছেন। উন্নয়নের এই ধারাকে ব্যাহত করতে নানা অশুভ শক্তি একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনা সরকারের বিকল্প নেই।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন,,, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের পৌঁছে দিতে হবে পরের প্রজন্মের কাছে।ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও মানুষের মন থেকে তাঁকে মুছতে পারেনি। বাঙালি জাতি যতদিন থাকবে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ততদিন মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন। তাঁকে হারানোর শোককে শক্তিতে রুপান্তর করে দেশ ও দেশের উন্নয়ন বিরোধী সকল অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।

টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন করে বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন এগিয়ে নিতে আমরা বদ্ধপরিকর, আন্দোলনের নামে যেকোনো ধ্বংসাত্মক অপতৎপরতা শক্ত হাতে মোকাবেলা করা হবে।’

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, ‘বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার এখন ৫০০ বিলিয়ন ডলারের মতো। এর আকার দ্বিগুণ বাড়িয়ে ট্রিলিয়নে নেওয়ার স্বপ্নের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ সরকারের বিকল্প নেই। দেশরত্ন শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে অর্থনীতির প্রায় প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে।’

বিজিএমই-এর সহ সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর চৌকষ নেতৃত্বে করোনা শেষে ঘুরে দাঁড়ানোর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ, তারপরও বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অবস্থান শক্তিশালী হয়েছে। এতে বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখার পাশাপাশি বাজার হিস্যা ১ দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে। এমনকি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভিয়েতনামের চেয়েও বেশ এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। অব্যাহত অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দিতে হবে।’

চট্টগ্রাম নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পঞ্চাশ বছর পরেও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এখনো আস্ফালন করে। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

এছাড়াও আলোচনায় আরও অংশ নেন ফ্লোরিডা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইমরান, সুচিন্তা বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. হোসেন আহামদ ও আবুল হাসনাত চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ার হোসেন নোবেল, ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ নেতা সুফিউর রহমান টিপু, কাজী মো. আরিফ ও সাজিবুল ইসলাম সজিব, সরকারি সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস মাকসুদুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম সাইফ, মো. সালাউদ্দিন, ইমরান মাহমুদ রনি, মো. হায়দার, যুবনেতা সেলিম, রেজাউল করিম ও আশরাফ আলম।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm