ছোট ভাইয়ের ‘প্রেমিকা’ নিয়ে দ্বন্দ্ব চট্টগ্রাম কলেজে, মাথা ফাটলো বড় ভাইদের
সমঝোতার ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের সংঘর্ষে কলেজ ছাত্রলীগ
সমঝোতার ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারো সংঘর্ষে জড়ালো চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কলেজের ছোট ভাইয়ের প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ে দ্বন্দ্ব মেটাতে গিয়ে মাথা ফাটলো বড় ভাইদের।
এর আগে সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে ‘প্রেমিকা’ সংক্রান্ত বিষয়ে নিজেদের কর্মীদের মধ্যকার সমস্যা সমাধানের জন্য মিটিংয়ে বসেছিলেন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম ও সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ। কিন্তু শান্তিচুক্তির পর দিনই আবারো অশান্ত হয়ে উঠে কলেজ।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকাল ১১টায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মধ্যকার সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত সাতজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষে সভাপতি মাহমুদুল গ্রুপের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তৃতীয়বর্ষের ছাত্র মো. তারেক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্র মিশু ও একই বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের আমিনুল ইসলাম রাশেদ আহত হয়েছেন। তবে নিজেদের গ্রুপের তিন-চারজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করলেও নাম বলতে পারেননি সাধারণ সম্পাদক সবুজ।
জানা যায়, ঘটনার শুরুতে চট্টগ্রাম কলেজের অডিটরিয়ামের সামনে দুই পক্ষের প্রথম বর্ষের ছেলেদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। সেই রেশ ধরে বাকবিতণ্ডা দুই গ্রুপের সিনিয়র কর্মীদের মধ্যে চলে যায়। এরপর দু’পক্ষের মারামারি শুরু করে। শুরু হয় ইট-পাটকেল ছোঁড়াছুড়ি। ইটের আঘাতে সভাপতি গ্রুপের তিনজন আহত হন।
ঘটনার বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, প্রথমবর্ষের এক ছোট ভাইয়ের প্রেমিকাকে সবুজ গ্রুপের এক কর্মী প্রতিদিন বিরক্ত করত। সে বিষয়ে সবুজের গ্রুপের সেই কর্মীকে বিরক্ত কেন করছে জানতে চাইলে সে আমার ছোট ভাইয়ের ওপর চড়াও হয়। এতে হাতাহাতি ও পরে মারামারির ঘটনা ঘটে।
সোমবার সমাধান পর আজ কেন আবার মারামারি ঘটনা ঘটলো–এমন প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুল করিম বলেন, গতকালের ইস্যুর সঙ্গে আজকের ইস্যুর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমরা দুই গ্রুপই নিয়মিত বসে আমাদের মধ্যকার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। এই সংঘর্ষের ঘটনা সাধারণ সম্পাদক সবুজের সামনেই ঘটেছে।
তবে মাহমুদের কথা মিথ্যা দাবি করে সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ বলেন, সভাপতি গ্রুপের পিচ্চি ছেলে মিশু এক মেয়েকে থাপ্পড় মারে। ছাত্রলীগের প্রভাব দেখিয়ে সে কলেজের বদনাম করছে। আমার গ্রুপের কর্মীরা তাকে থাপ্পড় মারার কারণ জানতে চাইলে সে সিনিয়রদের গায়ে হাত তুলে। এতে মারামারির সৃষ্টি হয়।
সবুজের উপস্থিতিতেই মারামারি হয়েছে–মাহমুদুলের এমন কথার বিষয়ে জানতে চাইলে সবুজ বলেন, শুধু আমি কেন? মাহমুদওতো উপস্থিত ছিল। সে এবং আমি দুজনই তো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছি। এখন সে যদি শুধু আমাকে কালার করতে চায় তাহলেতো বলার কিছু নেই।
এদিকে ক্যাম্পাসে মারামারির ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। পুলিশ গিয়ে তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ক্যাম্পাসে মারামারির ঘটনা নিশ্চিত করে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস জাহান বলেন, খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছি। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখন ঘটনার রিপোর্ট লেখা হচ্ছে। রিপোর্ট লেখা শেষ হলে আমরা বিস্তারিত জানাবো।
বিএস/ডিজে