ছাত্রলীগের ১২ কর্মী বহিষ্কার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, মধ্যরাতেই কার্যকর সিদ্ধান্ত
সিক্সটি নাইন ও সিএফসির ৬ জন করে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে গত কয়েকদিনের সংঘর্ষের ঘটনায় ১২ কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদের মধ্যে সিক্সটি নাইন গ্রুপের ৬ জন ও সিএফসি গ্রুপের ৬ জন কর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে দুজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করার অভিযোগে এক বছর ও বাকিদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার (১৭ অক্টোবর) রাত ১০টা থেকে পৌনে ১২টা পর্যন্ত চলা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিক্সটি নাইন গ্রুপের বহিস্কৃতরা হলেন ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মো. নাঈম, একই শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের সাইফুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আশরাফুল আলম নায়েম, একই শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের আকিব জাভেদ, ইতিহাস বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের জুনায়েদ হোসেন জয় ও অর্থনীতি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ফরহাদ। এদের মধ্যে আশরাফুল আলম নায়েমকে ১ বছর ও বাকিদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
অন্যদিকে সিএফসি গ্রুপের বহিস্কৃতরা হলেন আইন বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মির্জা খবির সাদাফ, একই বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের খালেদ মাসুদ, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের অহিদুজ্জামান সরকার, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের আরিফুল ইসলাম, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের তানজিল হোসেন ও আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তৌহিদ ইসলাম। এদের মধ্যে সাদাফকে এক বছর ও বাকিদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূইয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, গত চারদিনের ঘটনায় দুই পক্ষের অভিযোগ, সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্য যাচাইবাছাই করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় ১২ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করার অভিযোগে এক বছর ও বাকিদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বহিষ্কারের মেয়াদ আজ থেকেই কার্যকর হবে। এ সময় বহিষ্কৃতরা বিশ্ববিদ্যালয় ও হলে অবস্থান করতে পারবে না।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিক্সটি নাইন গ্রুপের এক কর্মীকে মারধর করে সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা। এ নিয়ে রাতেই সিএফসি ও সিক্সটি নাইন গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ও ইট-পাটকেল ছোঁড়াছুঁড়ি হয়। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
এ ঘটনার জেরে শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) জুমার নামাজ শেষে সিএফসির কর্মী আরাফাতকে জিরো পয়েন্টে একা পেয়ে মারধর করে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা। এসময় জিরো পয়েন্টে কয়েকজন সবজি বিক্রেতাও আহত হন। এ ঘটনা ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মী নাদিম হায়দারকে শাহজালাল হলের সামনে মারধর করে সিএফসির কর্মীরা। পরবর্তীতে নাদিম হায়দারকে হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও দুজনকে মারধর করে সিএফসির কর্মীরা।
একই ঘটনার জেরে রোববার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে শাহ আমানত হলের সামনে সাবেক সহ-সভাপতি আল আমিন রিমনকে একা পেয়ে মারধর করে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
এমআইটি/সিপি