চট্টগ্রাম সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আবাসিক হলের সিট বরাদ্দ নিয়ে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছে ছাত্রসহ অন্তত পাঁচজন। ঘটনার জন্য ছাত্রশিবিরের পক্ষ ছাত্রদলকে দায়ী করে বলা হয়, বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে নিয়ে এসে তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে ছাত্রদলের নেতারা বলেন, চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ থেকে কর্মীদের পলিটেকনিকে নিয়ে এসে তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভেতরে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে ১০ নভেম্বর কলেজ প্রশাসন হলে আসন বরাদ্দ দেওয়ার নোটিশ দেয়। ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। ১৮ নভেম্বর ফলাফল প্রকাশ হলে ১৯ ও ২০ নভেম্বর হলে ওঠে শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। হোস্টেলের জানালা ও দরজা ভাঙচুরও করা হয় সংঘর্ষ চলাকালে।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রশিবির উত্তরের প্রচার সম্পাদক সালাউদ্দিন আকাশ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে হামলার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। পলিটেকনিক্যালে আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আগে থেকেই সেখানে ছাত্রদলের নিয়ন্ত্রণ আছে।’
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরীফুল ইসলাম তুহিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম কলেজের স্টাইলে ছাত্রশিবির পলিটেকনিক্যালেও হল দখলের চেষ্টা করছে। তারা ছাত্রলীগের মত হেলমেট পরে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। খবর পেয়ে আমরা গেছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কের আড়ালে তারা এসব করছে।’
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রশিবির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজের সমন্বয়কদের নিয়ে এসেছিল বলে জানান চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের এই সদস্য সচিব। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম কলেজ-মহসিন কলেজের সমন্বয়কদের পলিটেকনিক্যালে কাজটা কী?’
চট্টগ্রাম নগর পুলিশ উত্তর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফয়সাল আহমেদ জানান, আবাসিক হলের সিট বরাদ্দের পর হলে ওঠাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. ইয়াসিনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
ডিজে