‘চোখের জলে বিদায়’ পুরনো ভিটা ছাড়তে হলো লালদিয়ার ২৩০০ পরিবারের
বন্দরের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় উচ্ছেদ অভিযান
চোখের জলে দীর্ঘদিনের পুরনো বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেল চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা থানার লালদিয়ার চরের ২৩০০ পরিবার।
পূর্বের নির্ধারিত সময় মতো (১ মার্চ) সকাল থেকে লালদিয়ার চরে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
নগরের পতেঙ্গার লালদিয়ার চর থেকে শান্তিপূর্ণভাবে নিজ উদ্যোগে বাসিন্দারা চলে যেতে থাকায় সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সোমবার সকাল থেকে মূল সড়কের পাশের এলাকায় বাঁশ পুঁতে বেড়া তৈরির কাজ শুরু করেন বন্দরের কয়েকশ শ্রমিক।
নিজ উদ্যোগে বসতভিটা ছেড়ে চলে যাওয়াদের অনেকে ভাঙাবাড়ি, আসবাব বিক্রি করে দেন নামমাত্র মূল্যে। কেউ কেউ রিকশা, ভ্যান ও ট্রাকের অভাবে মালপত্র নিয়ে অসহায় বসে আছেন।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (দুপুর ৩টা) পর্যন্ত সেখানে কোনো ধরনরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে চলছে দীর্ঘ ৪৮ বছরের পুরো বসতির উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে।
এর আগে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি লালদিয়ার চর চুড়ান্ত উচ্ছেদের বিষয়টি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও লালদিয়ার চর পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটি সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক সোমবার (আজ) সকাল চুড়ান্ত এ পরিচালনা করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানার লালদিয়ার চরের পৃথক দুটি ব্লকে বসবাস করা ২৩০০ পরিবার প্রশাসনের অভিযান চালানোর আগেই সকাল থেকে নিজ উদ্যোগে সরে তাদের জিনিষপত্র ও মালামাল নিয়ে চলে যাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩২ বছরের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় উচ্ছেদ অভিযান। এ অভিযানে ছয় জন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্য ছাড়াও বন্দর, ওয়াসা, পিডিবিসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের উপস্থিত আছেন। অবমুক্ত হওয়া লালদিয়ার চরের জায়গায়টি বাশেঁর খুঁটি দিয়ে কাটা তারের লাগিয়ে সীমানা প্রাচীরের কাজও চলছে একই সঙ্গে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশে বন্দরের ৫২ একর ভূমিতে থাকা অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। সকাল থেকে ছয়জন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রায় ৫শ পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্য ছাড়াও বন্দর, ওয়াসা, পিডিবিসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন অভিযানে। উচ্ছেদ হওয়া অংশে কাটা তারের সীমানা প্রাচীর দেওয়া হচ্ছে। এখন সেখানে যাতে আর কেউ প্রবেশ করতে না পারে বন্দরের আনসার সদস্যেরা নিয়োজিত থাকবে।’
মুআ/এমএহক