চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সংস্কারে উপাচার্যের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১১টায় চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামের কাছে এই তিন দফা দাবি লিখিতভাবে জমা দেয় শিক্ষার্থীরা।
উত্থাপিত দাবির প্রথম দফায় চুয়েটের বর্তমান উপাচার্য, উপ- উপাচার্য, রেজিস্ট্রার এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে আগামী ১৪ আগস্টের মধ্যে পদত্যাগ করতে বলা হয়। এছাড়া কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ শামসুল আরেফিনকে তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিনের দায়িত্ব ও সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করতে হবে বলেও দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
গত ১৯ জুলাই রাতে শিক্ষার্থীদেরকে ক্যাম্পাস থেকে জোরপূর্বক বের করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার প্রতিবাদে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। এজন্য দু’দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’ এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে এমন কোনো শিক্ষক ব্যবস্থাপনামূলক পদে থাকতে পারবেন না বলেও দাবিতে জানানো হয়।
দ্বিতীয় দফায় চুয়েট শিক্ষার্থী সাগরময় আচার্য, বিজয় হোসেন, আজহারুল মোহাম্মদ মুন্না, তৌফিকুর রহমান, ইমাম হোসেন নীরব সরাসরি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রতি হামলা, হত্যাচেষ্টা এবং হুমকি-ধমকি দেওয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত শেষ দফায় চুয়েটের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের সংশ্লিষ্টদের খামখেয়ালিপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের কথা বিবেচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ও সংশ্লিষ্টদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
শিক্ষার্থীদের এই দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার কথা জানান তারা।
চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান মোহাব্বত বলেন, আমাদের যুক্তিসঙ্গত দাবিগুলো বিনা বিলম্বে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। আমাদের এই দাবিগুলো পূরণ হলে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের পদক্ষেপ নেবো।
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে জানতে চাইলে চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘আমি হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছি। তাই ডাক্তারের পরামর্শে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে ছুটি নিয়েছি। ছুটি শেষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’
চুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ‘আমি আসলে ছাত্রদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। আপাতত আমি ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনায় বসেছি, পরে উপাচার্যের সঙ্গেও আলোচনায় বসবো। আমরা চুয়েটের মঙ্গল হয় এমন সিদ্ধান্ততেই উপনীত হবো, ইনশাআল্লাহ।’
চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের থেকে তিন দফা দাবি গ্রহণ করে রেজিস্ট্রার অফিসে জমা দিয়েছি।’
জেডএস/ডিজে