চুয়েটের হলে বসে মাদকসেবন, ৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
দু’বছরের একাডেমিক নিষেধাজ্ঞা, হল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে মাদকসেবনের দায়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) চার শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি তাদেরকে আবাসিক হল থেকেও স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত চার শিক্ষার্থী হলেন—চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ইমতিয়াজ আহমেদ, পারভেজ রেজা খান ও সৈয়দ শাহরিয়ার ইসলাম লামুন এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ মাহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিন কমিটির সদস্যসচিব ও চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত চারটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত রোববার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের ৪০২ নম্বর কক্ষে প্রভোস্ট ও সহকারী প্রভোস্টদের অভিযান চলাকালে চারজন শিক্ষার্থী ও দু’জন ক্যান্টিন বয়কে সন্দেহজনক অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে কক্ষটি তল্লাশি করে আনুমানিক ২০ গ্রাম গাঁজা ও ৫০০ মি.লি মদ পাওয়া যায়। দু’জন ক্যান্টিন বয়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা উক্ত শিক্ষার্থীদের মাদক সরবরাহের বিষয়টি স্বীকার করে।
শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন জব্দ এবং কল লিস্ট চেক করা হলে ক্যান্টিন বয়ের সঙ্গে ফোনালাপের সত্যতা পাওয়া যায়। এক ক্যান্টিন বয়ের মোবাইল ফোন তল্লাশি করে চার শিক্ষার্থীকে ৪০২ নম্বর কক্ষে বসে মদপানের ভিডিও পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকায় তাদেরকে গাঁজাসেবন ও মদপান এবং এসব মাদকদ্রব্য নিজ অধিকারে রাখার জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় হল প্রভোস্টদের লিখিত অভিযোগ ও জব্দকৃত আলামতের ভিত্তিতে গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিন কমিটির ২৮৩ তম জরুরি সভায় তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাদক প্রতিরোধ নীতিমালা-২০১৬ এর বিধি অনুযায়ী তাদেরকে সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে দুই বছরের বহিষ্কার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে চিরতরে বহিষ্কার করা হলো।
এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিন কমিটি সবদিক বিবেচনা করে ন্যূনতম শাস্তি প্রদান করেছে। মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ নীতিমালার বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আরও কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরে ১১ মার্চের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে আছে। যেকোনো উপায়ে মাদক নির্মূলে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের প্রভোস্টগণ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের মাদকসহ আটক করেছেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে আনীত এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সর্বনিম্ন শাস্তিস্বরূপ তাদেরকে এ শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
জেডএস/ডিজে