চিন্ময় ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, দুজনকে গ্রেপ্তার মামলার ৬ ঘণ্টা আগে

এবার বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃঞ্চ দাশ ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে আসামির তালিকায় থাকা দুই যুবককে মামলা হওয়ার ছয় ঘণ্টা আগে গ্রেপ্তারও করা হয়।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলাটি করেন ফিরোজ খান নামের এক ব্যক্তি। তবে মামলাটি ৩১ অক্টোবরে নথিভুক্ত করা হয়েছে।

এ মামলার খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সনাতনী সম্প্রদায়ের ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে।

এক ভিডিও বার্তায় এ মামলাকে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে দুষ্ট মহলের এমন প্রয়াস বলে মন্তব্য করেন চিন্ময় কৃঞ্চ দাশ ব্রহ্মচারী। তিনি বুধবার গভীর রাতে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের গ্রেপ্তারের শঙ্কা প্রকাশ করেন। এছাড়া প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে সকলের সহবস্থান রক্ষায়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়, সনাতনীদের ৮ দফার দাবির আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে সনাতনী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।

মামলায় আসামির তালিকায় দুই নম্বরে আছেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের সমন্বয়ক অজয় দত্তকে। তিন নম্বরে রয়েছেন ইসকন প্রবর্তকের অধ্যক্ষ লীলা রাজ ব্রক্ষচারী।

এছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন—গোপাল দাশ টিপু, ডা. কথক দাশ, প্রকৌশলী অমিত ধর, রনি দাশ, রাজীব দাশ, কৃঞ্চ কুমার দত্ত, জিকু চৌধুরী, নিউটন দে ববি, তুষার চক্রবর্তী রাজীব, মিথুন দে, রুপন ধর, রিমন দত্ত, সুকান্ত দাশ, বিশ্বজিৎ গুপ্ত, রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস। এছাড়া আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে এতে অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়।

এদিকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের অন্তত ৬ ঘণ্টা আগেই থানায় ধরে নিয়ে আসা হয় মামলায় আসামীর তালিকায় থাকা রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশ নামে দুই যুবককে।

বুধবার সন্ধ্যায় এই দুজনকে নগরীর সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ।

মামলার বিবরণে বলা হয়, ২৫ অক্টোবর বিকাল ৩টায় সনাতন সম্প্রদায় তাদের ৮ দফা দাবি আদায়ে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে মহাসমাবেশ করে। এদিন বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে ১ থেকে ৯ নম্বর আসামির ইন্ধনে ১০ থেকে ১৯ নম্বর আসামিসহ অজ্ঞাত ১৫/২০ জন, নিউমার্কেট জিরো পয়েন্ট স্তম্ভ ও আশপাশে সুপরিকল্পিতভাবে, দেশের সার্বভৌমত্বের অবজ্ঞা প্রদর্শনের হীন উদ্দেশ্য, দেশের অখণ্ডতাকে অস্বীকার করার মানসে, স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রতি অসম্মান ও অবমাননা করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার টাঙানো বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর, সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরোয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে।

মামলায় আরও বলা হয়, আসামিরা পরস্পর অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করে, স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর তাদের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে। দেশের ভেতর অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, দেশকে অকার্যকর করার তথা রাষ্ট্রদ্রোহের কর্মে লিপ্ত হয়েছেন। এ ঘটনায় আসামিরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন।

চিন্ময় কৃঞ্চ দাশ ব্রহ্মচারী সনাতনী জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধভাবে চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm