গত বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) একদিনে ৫৫২ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত করে ‘রেকর্ড’ গড়েছিল চট্টগ্রাম। চার দিন না যেতেই সেটি ভেঙে চট্টগ্রাম এবার গড়ল নতুন ‘রেকর্ড’। চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫৫৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে— যা একদিনের হিসেবে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। এর আগে গত বছরের ১১ এপ্রিল ৫৪১ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন। চট্টগ্রামে করোনার প্রথম ভাইরাসবাহক শনাক্ত হয় গত বছরের ৩ এপ্রিল।
এ নিয়ে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগী গিয়ে দাঁড়াল ৬০ হাজার ৯২৭ জন। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৭ হাজার ৩৮১ জন। আর বিভিন্ন উপজেলার ১৩ হাজার ৫৪৬ জন। এদের মধ্যে না ফেরার দেশে চলে গেছেন ৭২২ জন। এদের মধ্যে ৪৮২ জন চট্টগ্রাম নগরের। আর বিভিন্ন উপজেলায় মারা গেছেন ২৪০ জন।
সোমবার (৫ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি ৯টি ও কক্সবাজারের ১টি ল্যাবে ১ হাজার ৬৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৫৫৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে নগরের বাসিন্দা ৪১৪ জন এবং উপজেলার অধিবাসী ১৪৫ জন।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে করোনা পজিটিভ আসে ৫৯ জনের শরীরে। এদের মধ্যে ৩১ জন নগরের এবং ২৮ জন চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৩৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে করোনার উপস্থিতি মিলে দিনের সর্বোচ্চ ৮০ জনের দেহে। এদের মধ্যে নগরের ৬৮ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ১২ জন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১২৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৯ জনকে করোনার জীবাণু বাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে নগরের ৫৩ জন। বাকি ৬ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৭২ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে ৪৫ জন নগরের অধিবাসী, বাকি ২৭ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ১৯ জনের করোনা পজিটিভ আসে। তাদের মধ্যে ১৮ জনই নগরের, ১ জন উপজেলার।
এছাড়া, নগরীর বিভিন্ন ল্যাবে এন্টিজেন টেস্ট করানো হয় ২০৮টি নমুনা। তাতে করোনা পজিটিভ আসে ৬৫ জনের। এর মধ্যে ২৬ জন নগরের এবং ৩৯ জন বিভিন্ন উপজেলার।
নগরীর বেসরকারি করোনা পরীক্ষাগারের মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করানো হয়। তাতে দিনের সর্বোচ্চ ৮০ জনের দেহে ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে ৭৮ জনই নগরের, ২ জন উপজেলার। শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৯৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৫ জন করোনা পজিটিভ রোগীর খোঁজ মিলে। যাদের ২৪ জন নগরের এবং ১১ জন বিভিন্ন উপজেলার। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ২১ জন করোনা রোগীর হদিস পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে ১৪ জন নগরের ও ৭ জন উপজেলার। ইপিক হেলথ কেয়ারে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে ৫৮ জনই নগরের, বাকি ২ জন উপজেলার।
কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের ৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে উপজেলার ৭ জনের নমুনায় করোনা পজিটিভি পাওয়া যায়।
এদিন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টার ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।
উপজেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত রোগী পাওয়া যায় রাউজানে। সেখানে ৩৬ জনের দেহে ভাইরাসটির জীবাণু পাওয়া যায়। এছাড়া সীতাকুণ্ডে ১৮ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ১৫ জন, পটিয়ায় ১২ জন, হাটহাজারীতে ১১ জন, বাঁশখালীতে ১০ জন, আনোয়ারা ও মিরসরাইয়ে ৯ জন করে, বোয়ালখালীতে ৭ জন, ফটিকছড়িতে ৬ জন, সাতকানিয়ায় ৫ জন, সন্দ্বীপে ৪ জন, লোহাগাড়ায় ২ জন এবং চন্দনাইশে ১ জন করোনা পজিটিভ রোগীর হদিস মিলে।
এমএহক