চাপের মুখে ৫১৯ কোটি টাকা শোধ করলো বিপিসি, বকেয়া ছিল ভ্যাট

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) থেকে ৫১৯ কোটি টাকা বকেয়া ভ্যাট আদায় করেছে চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেট। ফার্নেস অয়েল আমদানির চালানে যথাসময়ে ভ্যাট পরিশোধ না করায় এই ভ্যাট বকেয়া পড়েছিল বলে জানা গেছে। ৫১৯ কোটি টাকা দীর্ঘদিন থেকে বকেয়া থাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে চাপ সৃষ্টি করা হয় বিপিসিকে। এরপর টাকাটা পরিশোধ করা হয়।

বিদ্যুৎ কোম্পানির জ্বালানি তেল হিসেবে আমদানি করা ফার্নেস অয়েল খাত থেকে উক্ত বকেয়া ভ্যাট আদায় করা হয়। বিপিসির নিয়ন্ত্রণাধীন পদ্মা, মেঘনা, যমুনা এবং স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানির মাধ্যমে এই ফার্নেস অয়েল আমদানি হয়।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ২০১১ সাল থেকে রেয়াতি (এসআরও) সুবিধা পেয়ে আসছে ফার্নেস অয়েল আমদানির ক্ষেত্রে। কিন্তু ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকেই এসআরও সুবিধার ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়ে শুল্ক আদায় বন্ধ রাখে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। এ ক্ষেত্রে কাস্টমস হাউস ফার্নেস অয়েল আমদানির পুরো শুল্ক দাবি করে।

এসআরও শর্ত মতে, সরকারি-বেসরকারি সব বিদ্যুৎ প্লান্ট বিপিসির সাথে চুক্তিসাপেক্ষে রেয়াতি সুবিধা ভোগ করেই ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে পারবে। পক্ষান্তরে বিপিসির সাথে চুক্তি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে কোনো কোম্পানি আমদানি করলে তাতে প্রতি লিটারে ৪০ সেন্ট করে শুল্ক দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।

এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ফার্নেস অয়েল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা পাওয়া যাবে না বলে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ফলে গত বছরের জুলাই থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান রেয়াতি সুবিধা আর পাচ্ছেন না।

কাস্টমস সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ১৬ লাখ ২৯ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল আমদানি করা হয়। ২০১৮ সালে ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৪৪২ মেট্রিক টন, ২০১৯ সালে ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৬২২ মেট্রিক টন, ২০২০ সালে ২০ লাখ ৭৪ হাজার ৪১ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল আমদানি করা হয়।

কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের চট্টগ্রামের কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলেন, মে মাসের দিকে বিপিসি থেকে ৫১৯ কোটি টাকা আমরা পেয়েছি। এই টাকা দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া ছিল। চট্টগ্রাম থেকে এ বছর ৯ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় হয়েছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) এটিএম সেলিম বলেন, ওই সময় এসআরও সুবিধার বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না থাকায় কিছু টাকা হয়তো বাকি পড়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ওই টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি।

এএস/কেএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!