চাঁদা না দিলেই হবে ক্রাইম রিপোর্ট— এমন হুমকি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে গিয়ে পাঁচলাইশ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলো কথিত সাংবাদিক।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৩ নম্বর রোডের ৭ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা কামালের বাসস্থানে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা দাবি করতে গিয়ে জিয়াউল হক জিয়া (৩৫) বছরের এক যুবক গ্রেপ্তার হয়েছেন। শনিবার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে বারোটায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৭ নম্বর বাড়ির নিচতলার বাসিন্দা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘৭ নভেম্বর আমি বাসায় ছিলাম না। তখন জিয়াউল হক জিয়া নামে একজন নিজেকে ক্রাইম পেট্রোল নিউজ ২৪ ডটকমের ক্রাইম রিপোর্টার পরিচয় দিয়ে আমার বাসায় প্রবেশ করে। তখন আমার স্ত্রী ছিল বাসায়। জিয়া নামের সেই কথিত সাংবাদিক তখন আমার স্ত্রীকে ভয় দেখায় যে সে অনেক বড় ক্রাইম রিপোর্টার। আমাকে নিয়ে সে অনেক বড় ক্রাইম রিপোর্ট করে দিবে। এতে আমি ফেঁসে যাবো। এসব ভয় দেখালে আমার স্ত্রী ভয় পেয়ে ওর হাতে থাকা পাঁচশো টাকা দেন। জিয়া তার একটা ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বলে যায় যে আমি যেনো তার সাথে কথা বলি তা না হলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে আমার। পরে আমি বাসায় ফিরলে আমার স্ত্রী কান্নারত অবস্থায় আমায় এসব খুলে বলে। তারপর ৮ নভেম্বর প্রদত্ত নম্বরে কল করলে সে বলে আমার সাথে দেখা করতে চায়। দেখা না করলে আমার অনেক ক্ষতি করবে। তখন আমিও বলি আচ্ছা আপনি বাসায় আসেন। তখন তিনি রাত ১০ টার সময় আমার বাসায় আসেন। বাসায় আসলে আমার সন্দেহ হলে কৌশলে দারোয়ানকে গেইট বন্ধ করে দিতে বলি এবং পাশ্ববর্তী কিছু লোকজনকে ডেকে আনি। পাঁচলাইশ থানায় খবর দিলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জিয়া জানায় তার সাথে কোর্ট বিল্ডিংয়ের ফারুক নামে একজন আছে যে তাকে এভাবে অনেক টাকা আদায় করার পরামর্শ দিয়েছে। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, ‘জানি না এই জিয়া আসলে কোনো সাংবাদিক কি না। আর যদি সাংবাদিক হয়েও থাকে তাহলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে এভাবে হেনস্তা করলে আমরা কই যাবো?’
এ নিয়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাশেম ভুঁইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জিয়াউল হক জিয়াকে গ্রেপ্তার করি। তার কাছে সাংবাদিক পরিচয়ে একটি কার্ডও রয়েছে। সে ভুয়া না আসল সাংবাদিক কেবল সেটার ভিত্তিতে তাকে আমরা গ্রেপ্তার করিনি। এই ঘটনার সাথে জড়িত ফারুক কে বা এ ঘটনায় তার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তা তদন্ত করছি।
তাকে চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করে দেয়া হয়েছে বলে জানান ওসি।
এসএএস/এসএস