চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রলীগ কর্মী ও সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী তাপস সরকার হত্যা মামলার চার্জশীটভূক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘শহীদ তাপস স্মৃতি সংসদ’।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতির রেজাউল হক রুবেল। এ সময় তিনি বলেন, ‘নিজের ও পরিবারের অনেক আশা নিয়ে তাপস এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু এখান থেকে তাকে লাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত তাপসের মত ১৭ জন খুন হয়েছে। যার একটিরও বিচার হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে খুনের ধারা অব্যাহত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরব ভূমিকাই এর জন্য দায়ী। আমরা দ্রুত এর বিচার চাই, যেন নতুন কোন তাপস হত্যা না হয়।’
তাপস স্মৃতি সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদাফ খানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সুমন নাসির, ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান রাফি, খন্দকার রফিক প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী চত্বরে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল ও শাহ আমানত হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ছাত্রলীগ কর্মী তাপস সরকার। এ ঘটনায় ওই রাতেই পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আরও ৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী দেখিয়ে অস্ত্র আইনে মামলা করে হাটহাজারী থানা-পুলিশ। পরদিন রাতে হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা করেন তাপসের সহপাঠী হাফিজুল ইসলাম। এই মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামী করা হয়। এতে ছাত্রলীগের সাবেক উপসংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক আশরাফুজ্জামান ওরফে আশাকে ১ নম্বর আসামী করা হয়।
অন্যদিকে পুলিশের করা মামলায় আশরাফুজ্জামান আশাকে ২ নম্বর আসামী করা হয়। এ হত্যার প্রায় দেড় বছর পর ২০১৬ সালের ২ মে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ২৯ নেতাকর্মীর নামে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আশরাফুজ্জামান আশার ব্যবহার করা পিস্তলের গুলিতেই খুন হন তাপস। এরপর ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আশা। ২০১৮ সালের শুরুর দিকে তিনি অস্থায়ী জামিন পান। এ ছাড়া এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে ১৫ জন গ্রেফতার হন। আশরাফুজ্জামানসহ এই মামলায় ১৫ জন জামিনে আছেন। বাকিরা পলাতক। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
এমআইটি/এমএফও