চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের গাড়ি ছাড়াও শিক্ষক বাসগুলো আটকে দেয়। এভাবে সকাল আটটা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে বিশ্ববিদ্যালয় ফটক অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ খবর জেনেও সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চবি প্রশাসনের কেউ ঘটনাস্থলে আসেনি। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাশের ছোট গেট দিয়ে ও শিক্ষকরা রিকশা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকেন।
তবে স্থানীয়দের হাতে ওই শিক্ষার্থী মারধরের শিকারের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে চবি’র মূল ফটকে অবস্থান নেয় প্রায় ১০ জন শিক্ষার্থী। পরে দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসনের আশ্বাসে ফটকের তালা খুলে দেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও প্রশাসন জানিয়েছে, সোমবার রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলক্রসিং এলাকায় স্থানীয় লোকজন এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে। এ ঘটনার পর রাত দেড়টার দিকে প্রধান ফটকে তালা দেয় কয়েকজন শিক্ষার্থী। এরপর সকাল ৯টা থেকে আবারও চবি’র মূল ফটকে অবস্থান নেন তারা। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাশের ছোট গেট দিয়ে ও শিক্ষকরা রিকশা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। সব পরীক্ষাও স্বাভাবিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আশ্বাসে ফটক খুলে দেন শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সোমবার রাত ১১টার দিকে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুলতানুল আরেফিন রেলক্রসিংয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় একটা সিএনজি তার পায়ের ওপর চাকা তুলে দেয়। এ বিষয়ে সিএনজি চালকের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। এরপর বিষয়টি সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর কয়েকজন ছেলে এসে মোটরসাইকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় লেখা দেখে তাকে গালিগালাজ ও মারধর শুরু করে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মো. হায়দার আরিফ জানান, একজন ছাত্রের সঙ্গে সিএনজি চালকের কথা কাটাকাটি হয়। ভাড়া সংক্রান্ত কিংবা শিক্ষার্থীর বাইকে সিএনজি দিয়ে আঘাতের ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা শুনেছি। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুলিশ প্রশাসন ও আমাদের সহযোগিতা না পেয়ে মূল ফটকে তালা দেয়। আমরা সোমবার পহেলা বৈশাখের পর লাখো মানুষকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুশৃঙ্খলভাবে বের করতে ব্যস্ত ছিলাম। এখন বিষয়টি নিয়ে আমরা বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।