চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত ফোনালাপ ফাঁসের পর সেই বিতর্কিত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। ফোনালাপের কথা শুনে তিনি তিনদিন ঘুমাতে পারেননি বলেও দাবি করেছেন।
শনিবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘চবি সিন্ডিকেট ফারসি বিভাগের নিয়োগ বাতিল করেছে। এ ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চার সদস্যের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে মূল হোতাদের সনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।’
উপাচার্য বলেন, ‘ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের তিনটি অডিও প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় রবীনকে (খালেদ মিসবাহুল মোকর রবীন) উপাচার্যের পিএস থেকে সরিয়ে আগের কর্মস্থল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে বদলি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করতেছে। অপরাধী কাউকে প্রশাসন ছাড় দেবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়াসহ সহকারী প্রক্টররা।
এর আগে গত ৩ মার্চ দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ বেচাকেনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির পদে ১২ লাখ, চতুর্থ শ্রেণির পদে ৮ লাখ, অফিসার পদে ১৫ লাখ ও শিক্ষক নিয়োগে ১৬ লাখ টাকার ওপরে লেনদেন হয় বলে ওঠে আসে।
এর মধ্যে একটি কল রেকর্ডে প্রভাষক পদের এক প্রার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পিএসকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে শোনা যায়। ফাঁস হওয়া সেই ফোনালাপে একজন আবেদনকারীকে উপাচার্যের একান্ত সহকারী খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীনকে বলতে শোনা গেছে। বাকি দুইটিতে উপাচার্যের ভাতিজা ও এক বিভাগীয় সভাপতিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব নিয়ামক শাখার এক কর্মচারীও আর্থিক লেনদেনের নানা বিষয়ে কথোপকথন শোনা যায়। এই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রবীনকে উপাচার্যের একান্ত সহকারী পদ থেকে সরিয়ে আগের কর্মস্থল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে বদলি করা হয়।
এছাড়া ফার্সি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে সিলেকশন বোর্ডে বিভাগসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ শিক্ষক না রাখা, আবেদনের সময়স্বল্পতা, আবেদন করেও মৌখিক পরীক্ষায় যোগ্য প্রার্থীদের ডাক না পাওয়া, উচ্চ আদালতের রুল নিষ্পত্তি না করেই নিয়োগপ্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ নানা অভিযোগ ওঠে।
সিপি