চবিতে তিন শিক্ষার্থীকে অভিনব শোকজ, মানববন্ধনে যেতে বাধ্য করার অভিযোগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) মিটন চাকমা নামের এক শিক্ষার্থীকে প্ররোচনা দিয়ে মানববন্ধনে অংশ নিতে বাধ্য করার অভিযোগে তিন শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যদিও অভিযুক্তদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মিটনকে বাধ্য করে ওই অভিযোগ আনিয়েছে। মিটন চাকমা পালি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

গত ২ সেপ্টেম্বর সকালে পরীক্ষা চলাকালীন যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবিতে পদযাত্রা করে ১১ শিক্ষার্থী। পরে অবিলম্বে শাটল ট্রেন কিংবা বাস সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয় তারা।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্বাক্ষরিত এই নোটিশ মানববন্ধনে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থীর বিভাগে পাঠানো হয়। নোটিশে আগামী তিন দিনের মধ্যে তাদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।

অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থী হলেন অর্থনীতি বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাজেশ্বর দাশগুপ্ত, ইংরেজি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শাহ মোহাম্মদ শিহাব ও পদার্থবিদ্যা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আশরাফি নিতু। এদের মধ্যে প্রথম দুইজন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কর্মী এবং অপরজন শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজেশ্বর দাশগুপ্ত চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত ২ সেপ্টেম্বর আমরা মানববন্ধন শেষে প্রক্টর অফিসে স্মারকলিপি দিতে যাই। তখন ওনারা স্মারকলিপি গ্রহণ করে রিসিভড কপি না দিয়ে হয়রানি করে। পরে বাকিদের বের করে মিটন চাকমাকে আটকে রাখে। মিটন জানুয়ারিতে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে মুচলেকায় স্বাক্ষর করেছিলেন। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়— স্বাক্ষর করেও কেন মানববন্ধনে অংশ নিয়েছে। পরে পরীক্ষা দিতে দেবে না বলে জোর করে আমাদের নামে অভিযোগ দিতে বাধ্য করেছে।’

তিনি আরও বলেন, পরিবহন চালু ও আবাসিক হল খোলার দাবিটা যৌক্তিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন আচরণে আমরা লজ্জিত।

অপর অভিযুক্ত শিক্ষার্থী শাহ মোহাম্মদ শিহাব চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘মিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ছাত্র সংগঠন করে। সে তার সংগঠনের জায়গা থেকে নিজ উদ্যোগে আন্দোলনে এসেছে। প্রক্টর অফিসে তাকে আটকে রেখে জোর করে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ লিখিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে সে আমাদের কাছে সেটি স্বীকারও করে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূইয়া চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘অভিযোগকারী বিভাগের পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে সবার আগে লিখিত দিয়েছে তার পরিবহন ও আবাসিক হল খোলা লাগবে না। পরে আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি একদিকে লিখিত দিয়েছো, অন্যদিকে মানববন্ধন করতেছো, বিষয়টা কী? তখন সে জানালো তাকে বাধ্য করা হয়েছে মানববন্ধনে অংশ নিতে। পরে সে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এখানে তাকে অভিযোগ দিতে বাধ্য করার কিছু নেই। সে স্ব-ইচ্ছায় অভিযোগ দিয়েছে। আমরা তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি।’

এমআইটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!