চট্টগ্রামে মতো প্রথমবারের প্রবাসী উৎসব আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম সমিতি ওমান। অনুষ্ঠানে ৯ জন এনআরবি সিআইপিসহ ৭০ জন ওমান প্রবাসীকে মানবতার সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে নগরের রেডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত উৎসবে অংশ নেন ওমানে বসবাসরত চট্টগ্রামের কয়েক’শ প্রবাসী ও তাদের পরিবার।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরউদ্দিন, চট্টগ্রাম ৮ আসনের সাংসদ মোসলেম উদ্দিন আহমদ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুস সালাম, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার মো. ফরহাদ হোসেন খাঁন, পিএসসি, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক মো. আবু সাইদ, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের উপ পরিচালক জহিরুল আলম মজুমদার, নগর আওয়ামী লীগের নেতা সাবেক খোরশেদ আলম সুজন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামে এখন হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কর্মযজ্ঞ চলছে। আগামী কয়েক বছরে চট্টগ্রাম হবে এই মহাদেশের অন্যতম অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্র ও বিনিয়োগের স্বর্ণক্ষেত্র। অচিরেই চট্টগ্রামের সাথে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক যোগাযোগ বাড়বে। এখানে যে সকল অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো গড়ে উঠছে তাতে বিনিয়োগ করে প্রবাসী ব্যবসায়ীরা লাভবান হতে পারবেন সহজেই।
হুইপ শামসুল হক চৌধুরী বলেন, প্রবাসীরা যদি দেশে কোনো কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেন এবং এতে কারো কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয় সেটাই বিনিয়োগ হিসেবে ধরে নেওয়া যাবে। সত্যিকার অর্থে প্রবাসীরা রেমিট্যান্সযোদ্ধা। সেটি আমাদের স্বীকার করতেই হবে। তারা যদি বিমানবন্দরে বা এদেশে এসে বিনিয়োগ করতে কোন ধরনের সমস্যায় পড়েন তবে আমাদের কাছ থেকে আমরা সব ধরনের সহায়তা পাবেন।
এসময় দেশের সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগ করে নতুন সম্ভাবনাগুলো থেকে লাভবান হতে ওমানপ্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম। এসময় তিনি চট্টগ্রাম চেম্বারের পক্ষ থেকে প্রবাসীদের যে কোন ধরনের ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দেন।
চেম্বার আরও সভাপতি বলেন, এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের আউটার রিং রোডে গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক প্রকল্প প্রবাসীদের বিনিয়োগের জন্য একটি ভাল ক্ষেত্র হতে পারে। তারা এখানে যৌথভাবে বা নিজ উদ্যেগে জায়গা বরাদ্দ নিয়ে বিনিয়োগ করে দেশের অর্থনীতিতে আরও বড় অবদান রাখতে পারেন।
চট্টগ্রাম সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে বাস্তবমুখী ও যুগান্তকারী অনেকে উদ্যোগ নিয়েছে। তারপরও প্রবাসীদের অনেক ভোগান্তি ও সমস্যা রয়ে গেছে। তাই সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে রেমিটেন্সযােদ্ধা প্রবাসীদের দূর্ভোগ লাঘবে আরও আন্তরিক হওয়ার।
তিনি যোগ করেন, সময় থাকতে এসব নিয়ে ভাবতে হবে এবং ফলপ্রসু পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, সাথে সাথে রেমিটেন্স প্রবাহ যাতে মজবুত থাকে এবং প্রবাসী শ্রমিকরা যাতে দেশে এবং প্রবাসে বাংলাদেশ সরকার ও দূতাবাসগুলোর দ্রুত ও কার্যকর সহযোগিতা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
২০১৫ সালে ওমানে চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রবাসীদের গড়া সংগঠনটি এ পর্যন্ত ১৫১ জন অসহায় প্রবাসী বাংলাদেশির মরদেহ দেশে পাঠাতে সহায়তা করেছে। এছাড়াও ৫ শতাধিক অসহায় প্রবাসীর চিকিৎসায় সহায়তা ছাড়াও প্রবাসীদের কল্যাণ ও মানবতার সেবায় অনেক উদ্যোগ নিয়েছে।