ঈদের আগে পরে সম্ভাব্য ৯ দিনের ছুটিতে চট্টগ্রাম শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নাগরিকদের কাছ থেকেও সহযোগিতা চাইছে পুলিশ। এক্ষেত্রে বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা ছাড়াও পরিবহন সেক্টর, আর্থিক লেনদেন নিরাপদ করা ও ছিনতাই প্রতিরোধে এবারের ঈদে নিরাপত্তা পরিকল্পনা করেছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি)।
ঈদ উপলক্ষে কেউ বড় অঙ্কের টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে চাইলে পুলিশের পক্ষ থেকে এসকর্ট সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে সিএমপির। তবে এই নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নাগরিকদের কাছ থেকেও সহযোগিতা চায় তারা।
ঈদে চট্টগ্রাম নগরীর সার্বিক নিরাপত্তায় নেওয়া পদক্ষেপ জানাতে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।
ঈদের আগে-পরে সম্ভাব্য নয়দিনের ছুটিতে বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুরো বাসা, একেবারে পুরো বিল্ডিং খালি করে যেন কেউ চলে না যায়, সেই অনুরোধ থাকবে আমাদের। কেউ না কেউ যেন বাসায় থাকেন। একটি বাসায় নয় দিন কেউ থাকবে না— এটা তো অ্যালার্মিং। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, বাসার সামনে-পেছনে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা এবং ক্যামেরা বসানো। যিনি শহরে একটি বাড়ির মালিক, তিনি দুটি ক্যামেরা কিনে লাগাতে পারবেন না— এটা আমরা বিশ্বাস করি না। ক্যামেরা লাগালে আমাদের জন্য সুবিধা হবে— কেউ অপরাধ করলেও আমরা শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারব।’
নাগরিকদের সহযোগিতা পেলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমাকে তো অবশ্যই সহযোগিতা করতে হবে। আমাকে সহযোগিতা না করলে তো নিরাপত্তা দেওয়াটা খুবই দুরূহ। নিজেরা সচেতন না হয়ে শুধু পুলিশকে দোষারোপ করলে সমাধান মিলবে না। নগরবাসীকে বলব— আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন, আমরা আপনাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করব।’
ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা বড় অঙ্কের নগদ অর্থ লেনদেনে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে সিএমপি কমিশনার সালেহ মো. তানভীর বলেন, ‘পুলিশের কাছে যদি গাড়ি পর্যাপ্ত থাকে, তাহলে আমরা টাকাসহ বহনকারীকে আমাদের গাড়ি দিয়ে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’
সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির পক্ষ থেকে ‘নিরাপত্তায় সতর্কতামূলক পরামর্শ’ হিসেবে বের করা একটি প্রচারপত্র সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করা হয়।
এতে নাগরিকদের, বাসার বাথরুম অথবা রান্নাঘরে ব্যবহৃত একজাস্ট ফ্যানের বাইরের অংশে লোহার গ্রিল লাগানো, বাসার জানালার বাইরের অংশে বক্সগ্রিল ব্যবহার করা, বাসার দরজায় অটোলক ব্যবহার, মূল্যবান জিনিস ও টাকা-পয়সা বিশ্বস্ত কারও হেফাজতে রেখে যাওয়া, প্রত্যেক ভবনে রাস্তামুখী সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
এছাড়া পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে বাসার দরজা না খোলা, হকার-ফেরিওয়ালাকে বাসায় ঢুকতে না দেওয়া, অপরিচিত লোককে বাসার আশপাশে ঘুরতে দেখলে ছবি তুলে রাখার পরামর্শও দিয়েছে সিএমপি।
এআরটি/ডিজে