চট্টগ্রাম রেলে ‘ডিজির নির্দেশে’ বাসা দখল নিতে গিয়ে জনরোষে প্রকৌশলী ও আরএনবি

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামে বাসা বরাদ্দের আগেই দখল নিতে গিয়ে জনরোষের শিকার হয়েছেন রেলের প্রকৌশলী ও আএনবির সদস্যরা। পরে সেই বাসা দখল না নিয়েই তারা ফিরে আসে।

প্রকৌশলী এটি মহাপরিচালকের (ডিজি) নির্দেশে করেছেন বলে জানান। তবে ডিজি জানান, তিনি বিষয়টি দেখতে বলেছেন, কিন্তু কোনো বেআইনি কাজ করতে বলেননি।

৭ ডিসেম্বর (শনিবার) এ ঘটনা ঘটেছে পাহাড়তলী হাসপাতাল কলোনিতে।

জানা গেছে, রেলের খালাসি বিথী আক্তারের নামে পাহাড়তলী হাসপাতাল কলোনির ই/৮১/এফ বাসাটি বিভাগীয় প্রকৌশলী (১) দপ্তর থেকে বরাদ্দ দেয়। কিন্তু বিথী সেটি যান্ত্রিক বিভাগে কর্মচারী আবু সালেহ মুসার সঙ্গে হাতবদল (মিচুয়াল) করেন ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর। কয়েক মাস পর মুসার মৃত্যুতে তার পরিবার বাসাটি বিভাগীয় প্রকৌশলী (১) দপ্তরের এর খালাসি শাহজালাল বাচ্চুকে বুঝিয়ে দেওয়ার আবেদন করে বাসা বরাদ্দ কমিটির কাছে। কমিটির চার সদস্য ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর বাসাটি শাহজালালকে বরাদ্দের জন্য সুপারিশ করেন।

কিন্তু গত ১ ডিসেম্বর বিভাগীয় প্রকৌশলী (২) চিঠি দিয়ে হাসপাতাল কলোনির ওই বাসাটি পাহাড়তলী ক্যারেজশপের খালাসি আরিফুল ইসলামকে বরাদ্দ দিয়েছে বলে জানায়। কিন্তু সেই চিঠিতে আরিফুল ২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর বাসার জন্য আবেদন করেছে বলে উল্লেখ করা হয়। বিভাগীয় প্রকৌশলী (২) রিয়াসাত ইসলাম বাসাটি বরাদ্দ দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাসা বরাদ্দ পাওয়ার জন্য কোনো আবেদনই করেননি আরিফুল ইসলাম। তার নামে আগে থেকেই টাইগারপাসে টি/১৯৪৫ নম্বরের একটি বাসা বরাদ্দ রয়েছে।

রেলের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো রেল কর্মচারী মারা গেলে তার পরিবার বাসা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এসএসএইকে বুঝিয়ে দিবেন। বাসা হস্তান্তর করে নো অবজেকশন ক্লিয়ারেন্স নেবেন, এরপর মৃত ব্যক্তির এককালীন টাকা ও পেনশন তুলতে পারেন মৃত রেল কর্মচারীর পরিবার। কিন্তু মৃত মুসার স্ত্রী মমতাজ বেগম বাসাটি বুঝিয়েই দেননি।

বাসা বুঝে না পেয়েই ৩ ডিসেম্বর এসএসএই সোহেল রানা ‘বাসা বুঝে পেয়েছেন’ মর্মে একটি চিঠি দেন রেল কর্মকর্তাদের।

এরপর ৭ ডিসেম্বর বাসা বরাদ্দ দিয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলী দুপুরে রেল পুলিশ ও আরএনবি সদস্যদের নিয়ে বাসা দখলমুক্ত করতে যান। সেসময় আশপাশের বাসিন্দারা এর প্রতিবাদ করলে তারা ফিরে আসেন।

পাহাড়তলী ক্যারেজ ইনচার্জ প্রধান সহকারী রাইসুল ইসলাম বলেন, বাসা প্রাপ্তি বা বরাদ্দের কোনো আবেদনের কপি আরিফুল ইসলাম জমা দেননি।

বিভাগীয় ভূসম্পত্তি দপ্তরের (পূর্ব) প্রধান সহকারী ইশতিয়াক বলেন, ‘বাসা উচ্ছেদে কোনো দাপ্তরিক আদেশ বা চিঠি আমাদের কাছে নেই।’

পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় প্রকৌশলী (২) রিয়াসাত ইসলাম বলেন, ‘ডিজি আদেশে একাজ করেছি আমি।’

বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব) আবু জাফর মিয়া বলেন, এ বিষয়টি আমি জানি না। আমি খোঁজ নিচ্ছি।’

রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) সর্দার সাহাদাত আলীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বিভাগীয় প্রকৌশলী (২)-কে বাসার বিষয়টি দেখতে ফোন করলেও বেআইনি কোনো কাজের নির্দেশ দিইনি।’

জেএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm