রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরে (সিসিএস) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ডিউটিতে বাড়ানো হয়েছে সশস্ত্র আরএনবি (রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী) সদস্য। বন্ধ করা হয়েছে বহিরাগতদের প্রবেশ। এছাড়া দপ্তরে ইউনিট রেল শ্রমিক দলের একটি কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল থেকে সিসিএস দপ্তরের প্রবেশমুখে দেখা গেছে এমন চিত্র।
জানা গেছে, ৯ জন আরএনবি সদস্যকে সিসিএস দপ্তরের প্রবেশমুখে দায়িত্বে আছেন। এর মধ্যে পাঁচজন ছিলেন সশস্ত্র সদস্য। এছাড়া দপ্তরে ইউনিট শ্রমিক দলের একটি কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, দপ্তরের এসএসএই পদে থাকা ইয়াকুব আলী ফকিরের বদলির প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিল শ্রমিক দলের একাংশের নেতাকর্মীরা।
আরএনবি কমান্ড্যান্ট শহিদ উল্লাহ বলেন, ‘রেল ভবনের শীর্ষ কর্মকর্তার এই আদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’
আরএনবির (পূর্ব) চিফ কমান্ড্যান্ট আশাবুল ইসলাম বলেন, ‘রেল ভবনের নির্দেশনা মোতাবেক বহিরাগত অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবং টেন্ডারবাজি বন্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (পূর্ব) বেলাল উদ্দিন সরকার বলেন, ‘গণমাধ্যমে এই বিষয়ে সংবাদ হলে রেলভবন থেকে দপ্তরের বিষয়ে কড়াকড়ির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম প্রতিদিনে ‘চট্টগ্রাম রেলের সিসিএস দপ্তরে বহিরাগত ঠেকাতে নিরাপত্তা জোরদার’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর কড়াকাড়ি করা হয় দপ্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রামের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের (সিসিএস) বেড়েছে বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা। এখানে ঢুকতে ঠিকাদারদের পরিচয়পত্রের প্রয়োজন হলেও তাদের সঙ্গে অনেকে ঢুকে পড়েন। আবার অনেকে রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই সেখানে ভিড় জমান। অথচ এ দপ্তরে রয়েছে দুটি গোডাউন। যেখানে দেশি-বিদেশি দামি মালামালের সঙ্গে রয়েছে রাসায়নিক দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ।
দপ্তরের এ এলাকাটি কেপিআই (কি পয়েন্ট ইনস্টেশন) জোন হিসেবে পরিচিত। অর্থাৎ কোনো এলাকা বা স্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ হলে এসব জায়গাকে কেপিআই জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যেখানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত থাকে। এখানে দুটি বড় গোডাউন আছে, যেখানে রেলের দেশি-বিদেশি মালামাল মজুদ থাকে। সঙ্গে রাসায়নিক দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থও এসব গোডাউনে রাখা হয়। এসব দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে—পেট্রোল, কেরোসিন, ডিজেল, বিভিন্ন ধরনের লুব ওয়েল, নেলকো, এসিড, ফাক সিগন্যাল, ব্যাটারি, বিভিন্ন ধরনের রং, গানি ব্যাগ, ক্যাবেল, ফাইবার বোর্ড, ফ্লোরিং কম্পোজিশন ইত্যাদি। এজন্য গোডাউনের বাইরের দেয়ালে সাঁটানো আছে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। তাই এসব এলাকায় প্রবেশের অধিকারও সংরক্ষিত।
যেসব ঠিকাদার এখানে আসেন তাদের জন্য পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। যাদের পরিচয়পত্র নেই তাদের প্রবেশে নিষেধ আছে। কিন্তু এরপরও ঠিকাদারদের সঙ্গে অনেকে দলবল নিয়ে ঢুকে পড়েন। আবার অনেকে এমনিতেই আড্ডা দেন দপ্তরের ভেতরে ঢুকে। আরএনবি সদস্যরা বাধা দিলে তাদের লাঞ্ছিত করেন, হুমকি দেন।
জেএস/ডিজে