চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভিড় কমাতে বারান্দার অসুস্থ রোগীদের ডিসচার্জ
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে ডাক্তার-নার্স, রোগীদের ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আসার সুবাদে পুরো মেডিকেলজুড়ে কঠোর নিরাপত্তার বলয়ে নেওয়া হয়। মেডিকেল ভবনের বাইরে থেকে উঠিয়ে দেওয়া হয় ভাসমান দোকান। বন্ধ করে দেওয়া হয় খাবারের হোটেল এবং যত্রতত্র পার্কিং। একইসঙ্গে বারান্দায় থাকা অনেক অসুস্থ রোগীকেও ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। ফলে নিচে দাঁড়িয়ে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায়। তবে মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর আগের রূপে ফিরে যায় হাসপাতাল।
এমনকি মন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মেডিকেলের ডাক্তার-নার্সরা হাজির হন। ফলে ওয়ার্ড ডাক্তার ও নার্সশূন্য হয়ে পড়ে। এতে চিকিৎসাধীন রোগীরা দুর্ভোগে পড়েন।এর মধ্যে ডিসচার্জ করে দেওয়া রোগীদের হাসপাতালের নিচে রাস্তার ধারে মালপত্র নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রামের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমন চিত্র দেখা গেছে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টা পর্যন্ত। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের আগমন উপলক্ষে।
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মিলনায়তনে ডাক্তার, নার্সদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল সাড়ে ১১টায়। এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক, ডাক্তার, নার্স সকাল ৮টার আগে কনফারেন্স রুমে গিয়ে হাজির হন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে সাত জন করে নার্সকে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকতে বলা হয় ওয়ার্ড থেকে। কিন্তু প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে ১৫ জনের ও বেশি স্টাফ নার্স মতবিনিময় সভায় হাজির হন। মিলনায়তন রুমের কানায় কানায় ছিল পরিপূর্ণ।
এদিকে ডা. সামন্ত লাল সেন যখন রোগীদের উন্নত সেবা দেওয়ার কথা বলছিলেন তখনই ওয়ার্ডের ডাক্তার ও নার্স সেবায় সংকটে পড়ে রোগীরা। ওয়ার্ডের বিশৃঙ্খলা চরম আকার ধারণ করে।
১৮ নম্বর নিউরোলজি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ৪০ জন রোগীকে দেওয়া হয়েছে ছাড়পত্র। এই ওয়ার্ডের স্টাফ নার্স চিন্তা সরকার জানান, আমাদের ১১ জনের লিস্ট করা হয়েছিল। সে তালিকার বাইরেও নার্সরা মতবিনিময় সভায় গেছেন। ওয়ার্ডে আমরা দুই তিনজন থেকে দায়িত্ব পালন করছি।
এদিকে নিউরোলজি ওয়ার্ডের বাইরে রোগীদের ও তার স্বজনরা নিজে নিজে স্যালাইন দিচ্ছেন এবং স্যালাইন শেষ হয়ে গেলে নিজেরা স্যালাইন খুলে নিচ্ছেন। অন্যদিকে হাসপাতালের ভেতরে খাবারের দোকান বন্ধ থাকায় রোগীর স্বজনরা খাবার কিনতে না পেরে না বিপদে পড়েন। মেডিকেলের বাইরে থেকে চড়া দামে খাবার কিনতে হয়েছে তাদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেলের পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘মন্ত্রী আসার সুবাদে আমরা মেডিকেলকে নিরাপত্তার বলয়ে রেখেছিলাম। এজন্য আমরা ভাসমান, দোকান, পার্কিং বন্ধ করেছিলাম। মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর সব স্বাভাবিক হয়েছে।’
ডিজে