চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার দূরে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান

প্রবল শক্তি সঞ্চার করে নিয়ে বাংলাদেশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফান’। ধারণা করা হচ্ছে, ১৯৯১ সালের পর স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হতে পারে আম্ফান।

তবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে এ সুপার সাইক্লোনটি। এদিকে চট্টগ্রামে বিকেলের আকাশে মেঘ জমলেও অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম।

চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ মে) শেষরাতে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে আম্ফান। বুধবার (২০ মে) বিকেল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়।

এবারেও সুন্দরবন বাংলাদেশকে কতটা রক্ষা করতে পারবে তা নিয়েও শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি এর কারণে ব্যাপক কৃষি জমির ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। ঘূর্ণিঝড়ের সময় ৫ থেকে ১০ ফুট অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুরে আবহাওয়ার এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তি এসব তথ্য জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এতে আরও বলা হয়, সুপার সাইক্লোনটির কেন্দ্রের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফান’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। দুপুর ১২টায় (১৯ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উল্লিখিত উপকূলীয় জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এ অবস্থায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এসআর/এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!