চট্টগ্রাম বন্দরে মৌখিক পরীক্ষায় পাশের ৩ বছরেও ঝুলে আছে নিয়োগ

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি। চট্টগ্রাম বন্দরে কম্পিউটার অপারেটরের জন্য ৪১৬টি পদের জন্য জমা পড়া আবেদন থেকে পর যাচাই-বাছাই করে প্রায় ২৩ হাজার পরীক্ষার্থীকে লিখিত পরীক্ষার সুযোগ দেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয় ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর। এতে উত্তীর্ণ হয় ৮৯০ জন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষাও দিয়েছেন। কিন্তু চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণরা আর নিয়োগ পেলেন না গত প্রায় তিন বছরে।

সবচেয়ে বড় কথা এতোদিন পরও কারা চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ সেটিও জানাতে পারেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাই বাধ্য হয়ে অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়া ভুক্তভোগীরা চূড়ান্দ ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় ও চট্টগ্রাম বিভাগকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশের দাবীতে মানববন্ধন করেছেন। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান ফটকে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে তারা।

মানববন্ধনে বন্দরে নিয়োগের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এছাড়া ২০১৭ সালে পরীক্ষার পরও ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

জানা গেছে, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবার পরে নিয়োগ কমিটি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা ও কোটার ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এখনো পর্যন্ত উক্ত পদের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল চট্টগ্রাম বন্দরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেনি বলে জানা যায়।

অভিযোগ উঠেছে, লেনদেনে বনিবনা না হওয়ায় এখনো পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে না। এছাড়াও জাতীয় নির্বাচনের পর প্রশাসনে রদবদল হওয়াকে ফলাফল প্রকাশ না হওয়ার কারণ বলা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে ‘নিম্নমান সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর’ পদের নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল সর্বশেষ গত ২৬ আগস্ট ফলাফল ঘোষণা করার কথা থাকলেও তাও করেনি চবক।

নিম্নমান সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগে কেন দেরী হচ্ছে জানতে চাইলে চবকের সচিব মো. ওমর ফারুক চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘কম্পিউটার অপারেটর পদে কেন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তা এ মুহূর্তে বলা মুশকিল। তবে প্রশাসনিক কারণে বিলম্ব হতে পারে। যারা মানববন্ধন করেছেন, তারা তো জানার কথা না তাদের চাকুরী বন্দরে হবে কিনা। তবে বন্দর কতৃপক্ষ চাকুরীর নিয়োগের বিষয়ে সব ধরণের ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।’

খবর নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে নিম্নমান বহি. সহকারী, নিম্নমান সহকারী-কাম-কম্পিউটার পদ এবং জুনিয়র স্টোরম্যান পদে এক লাখ প্রার্থী আবেদন করে। এসব পদে এত বেশি আবেদন জমা পড়েছিল বাছাই করতে চট্টগ্রাম বন্দরকে হিমশিম খেতে হয়েছিল। এর আগে সবগুলো নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছিল চট্টগ্রামকেন্দ্রিক। কিন্তু চবক প্রথমবার চট্টগ্রামের বাইরে গিয়ে ঢাকাতে এই পদের পরীক্ষা নিয়েছিল। এই পরীক্ষা নিতে বাড়তি খরচও বহন করতে হয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষকে।

এএস/এমএহক

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!