চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান ঢাকায় ধরা ডিবির হাতে

চট্টগ্রাম বন্দরের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও নৌবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলকে আটক করেছে পুলিশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাকে ডিবি পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। কোনো মামলায় তাকে এখনও গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল সোহায়েলকে রাজধানীর বনানী থেকে আটক করেছে।

এর আগে সোমবার (১৯ আগস্ট) নৌবাহিনী থেকে সোহায়েলকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তারও আগে গত ৭ আগস্ট এই দুই তারকা অ্যাডমিরালকে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে নৌবাহিনীতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সেখান থেকে নৌবাহিনীর ট্রেনিং এন্ড ডকট্রিনের কমান্ডার হিসেবে বদলি করা হয়।

রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জোরপূর্বক গুম এবং হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। গত তিন বছরে তিনি চট্টগ্রাম ও পায়রা—এই দুই বন্দরের চেয়ারম্যান থাকাকালে কয়েক শত কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ সোহায়েল কমোডোর থেকে রিয়ার অ্যাডমিরাল হিসেবে পদোন্নতি পান। অভিযোগ ওঠে, কোন জাহাজ বা ঘাঁটি কমান্ড কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কোর্স না করেই শেখ হাসিনা সরকারের অনুগ্রহভাজন হিসেবে রিয়ার এডমিরাল হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি।

মোহাম্মদ সোহায়েল এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গত বছরের ১২ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত তিন বছরে তিনি দুই বন্দরের চেয়ারম্যান থাকাকালে কয়েক শত কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

২০১০ সাল থেকে পরবর্তী দুই বছর মোহাম্মদ সোহায়েল র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের ডিরেক্টর ছিলেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক গুম এবং হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশকেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, ২০১০ সালে ১৩৩ জন ‘ক্রসফায়ার’, গুলি ও হেফাজতে নিহত হন। একই বছর ৪৪ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা অপহরণের শিকার হন। এদের মধ্যে পরে ছয়জনের লাশ মেলে, সাতজনকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। অন্যরা এখনো নিখোঁজ। ২০১১ সালে ১০০ জন ক্রসফায়ার ও হেফাজতে নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ৫৯ জনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ১৬ জনের লাশ পাওয়া যায়, চারজনকে থানা হেফাজতে দেওয়া হয়। অন্যরা এখনও নিখোঁজ। ২০১২ সালে ক্রসফায়ার ও পুলিশ-র‌্যাবের হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসে ৯১-এ। এ সময় ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ৫৬ জনকে, যাদের মধ্যে চারজনের লাশ পরে পাওয়া গেছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm