চট্টগ্রাম বন্দর বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে ‘চট্টগ্রাম বন্দর সংযুক্ত শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন’ নামে বিএনপিপন্থী একটি সংগঠন। বন্দরে শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু, আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ বন্ধ, এনসিটি ও সিসিটিতে তিন শিফট ভিত্তিতে ল্যাসিং শ্রমিক বুকিংয়ের দাবিও জানানো হয়। এছাড়া পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তিও বাতিলের দাবি জানানো হয়।
শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ‘চট্টগ্রাম বন্দর সংযুক্ত শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন’র নেতারা এসব দাবি জানান। তারা নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও চিটাগাং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বেসরকারি পরিচালনায় দেওয়ার প্রক্রিয়া যে কোনো মূল্যে রুখে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
শ্রমিক সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ হারুন বলেন, সিসিটি ও এনসিটিকে দুবাইভিত্তিক একটি বেসরকারি কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার দোসর সালমান এফ রহমান যে রূপরেখা প্রণয়ন করেছিল সেটি বাস্তবায়নের জন্য তোড়জোর চালাচ্ছে। আমরা কিছুতে এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হতে দেব না।
এই উদ্যোগ ‘দেশবিরোধী ও আত্মঘাতী’ উল্লেখ করে হারুন বলেন, দেশের স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দরকে রক্ষার জন্য এ ধরনের সিদ্ধান্ত চিরতরে বাতিল করা প্রয়োজন। কিছুদিন আগে বন্দর চেয়ারম্যান এক বছরের মধ্যে বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। আমরা এরও তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় সৌদি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা চুক্তি বাতিলের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের রুটিন কাজ করবে। বন্দর কীভাবে পরিচালিত হবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচিত সরকার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা, পরের অর্থবছরে ৪ হাজার ৪৭৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা আয় করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। চলতি অর্থবছরের প্রথম চারমাসে (অক্টোবর পর্যন্ত) আয় ১ হাজার ৬৪৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, যা গত অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি।
চট্টগ্রাম বন্দরের সাড়ে ৪ হাজার শূন্য পদে লোক নিয়োগ শুরু, আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ বন্ধ, এনসিটি ও সিসিটিতে তিন শিফট ভিত্তিতে ল্যাসিং শ্রমিক বুকিং করার দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে আগামী ২২ ডিসেম্বর বন্দর চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিও ঘোষণা করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বন্দর সংযুক্ত শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার।