বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, মাতারবাড়ি বন্দর, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক, ঢাকা-চট্টগ্রাম পাওয়ার গ্রিড শক্তিশালীকরণসহ চলমান প্রকল্পগুলো শেষে চট্টগ্রাম একটি শিল্প কেন্দ্রে পরিণত হবে। চট্টগ্রাম এমন একটি শহর যা জাপান থেকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ—এফডিআই আকৃষ্ট করে চলেছে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির আরও প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
শনিবার (২২ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু বে-ভিউতে আয়োজিত জাপান-বাংলাদেশ কূটনৈতিক বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
চট্টগ্রাম এওটিস অ্যালামনাই সোসাইটির (সিএএএস) প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার এ ইউ এম জোবাইরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএসআরএমের চেয়ারম্যান আলী হুসাইন আকবের আলী, জেট্রো’র কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি এন্ডো (আনন্দ), জাইকার কান্ট্রি রিপ্রেন্টেটর ইছি গুছি তমোহিদে, এওটিএস অ্যাডভাইজর ড. একেএম মোয়াজ্জেম হোসাইন বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও এসোসিয়েশন অফ ওভারসিজ টেকনিক্যাল কো-অপারেশনের (এওটিএস) প্রেডিডেন্ট শিনইয়া কুওয়ামা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এতে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুর রহমান, বিএসআরএম-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমের আলী হুসাইনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাম্বেসেডর ইতো নাওকি আরও বলেন, চট্টগ্রাম ইপিজেড এবং কর্ণফুলী ইপিজেডে ১০টি কোম্পানি প্রকৌশল পণ্য উৎপাদন করছে। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী প্রস্তুত হচ্ছে। আমি নিশ্চিত যে চট্টগ্রাম এমন একটি শহর যা জাপান থেকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ—এফডিআই আকৃষ্ট করে চলেছে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির আরও প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। জাপান গত ৫০ বছর বাংলাদেশের পাশে ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে পাশে থাকবে।
নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন জাপান সফরে দুই দেশের সম্পর্ক অন্য মাত্রায় পৌঁছাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ইতো নাওকি।
সিএএএস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার এইউএম জোবাইর বলেন, জাপান আমাদের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী বন্ধু দেশ। দুই দেশের কূটনৈতিক বন্ধুত্বের ৫০ বছরকে স্মরণীয় করে রাখতে আমাদের এই আয়োজন। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য শুধু অবকাঠামো নয়, মানবসম্পদ উন্নয়নও প্রয়োজন। এওটিএস দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে কাজ করছে।
জাপানে উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন দিক নিয়ে সিএএএস ও নিপ্পন একাডেমির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে জাপানে স্টাডি বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন চট্টগ্রামে জাপানের সাবেক কনসুলার জেনারেল মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম।
জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ধারায় অন্য সেমিনারে মূল বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সেলিম উদ্দিন এবং জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন-জেট্রো’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি ইউজি এন্ডো (আনন্দ) বিশেষ নিবন্ধ উপস্থাপন করেন। উভয় সেমিনারে মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সিএএএস’র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সালেহ জহুর।
এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পী ছাড়াও জাপানের দুজন শিল্পী জাপানি, বাংলা ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান পরিবেশন করেন। অন্যদিকে বয়স ভিত্তিক দুটি গ্রুপের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকারীকে গোল্ড মেডেল, ২য় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীকে ক্রেস্ট এবং সকল অংশগ্রহণকারীকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়েছে।