চট্টগ্রাম নগরে ১৩ খালের ১৫৬৫ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হবে

জলাবদ্ধতা নিয়ে কনভেনশনে সিডিএ চেয়ারম্যান

প্রকল্প নিয়ে আলোচনা সভা ও পরিকল্পনায়ই এতটা সময় কেটেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের মূল কাজ শুরু হয়েছে জুলাই থেকে। এ কারণেই নির্দিষ্ট মেয়াদে শেষ হচ্ছে না চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জলাবদ্ধতা প্রকল্প। প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদী সুফল পেতে প্রকল্প পুনর্বিবেচনার জন্য প্রস্তাবনা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানালেন সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ।

রোববার (৪ আগস্ট) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে জলাবদ্ধতা নিয়ে একটি কনভেনশনে সিডিএ চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। কনভেনশনের আয়োজন করে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম নামে একটি সংগঠন।

সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ আরও বলেন, নগরীর ৩৬ খালের মধ্যে আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ১৩ খালের এক হাজার ৫৬৫ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের তালিকা করেছি। আমার কাছে অসংখ্য তদবির আসে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করতে। কিন্তু আমার কিছুই করার নেই। নগরবাসীকে ভোগান্তি থেকে রক্ষা করতে আমার নেত্রী যে দায়িত্ব দিয়েন তা আমার কাছে বড় আমানত।

কনভেনশনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রামবাসীর বড় পাওনা হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্প অনুমোদন। সিডিএ, চসিকসহ সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই নগরী জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে। পাশাপাশি নাগরিকদেরও সচেতন হতে হবে। খালে ময়লা আবর্জনা না ফেলতে সচেতনতামূলক ২০ লাখ লিফলেট বিতরণ করেছে চসিক। দুই বছর মাইকিং করেছে। গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে। তারপরও খাল-নালা ভরাট হয় ময়লায়।

মেয়র নাছির আরো বলেন, আগস্টেই বারাইপাড়া খাল খননের দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। এই খাল খনন হলে বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, পূর্ব ষোলশহর এলাকার মানুষের সুফল পাবেন। উচ্ছেদ অভিযানে যত বাধাই আসুক তা আমলে না নিয়ে সশরীরে উপস্থিত থেকে সহযোগিতার ইচ্ছাও পোষণ করেন মেয়র।

নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী আলী আশরাফ বলেন, কোন সুষ্ঠু পরিকল্পনা ছাড়াই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এটিই একমাত্র প্রকল্প যার পুরো অর্থ সরকার একসাথে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। অথচ সরকারি প্রকল্পের অর্থ ছাড় হয় ধাপে ধাপে। কিন্তু দুর্ভাগ্য প্রকল্পটি যাচ্ছেতাইভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। তবে আশার দিক হলো সকল আলোচনা, সমালোচনা আমলে নিয়ে কর্তৃপক্ষ প্রকল্পে সংশোধন আনছে।

প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, খালের জায়গা খালকে ফিরিয়ে দিন। নদী শাসনের মতো খালগুলোও শাসন করুন। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে প্রকল্প তদারকির ব্যবস্থা থাকতে হবে। অন্যথায় খালগুলো আবার ভরাট হবে, বেদখল হবে।

কনভেনশনে সিডিএ প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী জলাবদ্ধতা প্রকল্পের চলমান কাজের অগ্রগতি নিয়ে স্লাইড প্রদর্শন করেন। এ সময় তিনি জানান, এখনো খালগুলোর মুখে স্থাপনে প্রস্তাবিত স্লুইচ গেটগুলোর নকশা প্রণয়নও হয়নি।

কনভেনশনে চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের সভাপতি ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন চসিকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ রেজাউল করিম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী অলি আফাজ, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ শাহ প্রমুখ।

এফএম/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!