চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে তেল যাবে ঢাকায়, খরচ কমবে ২৩৬ কোটি

বিনিয়োগের টাকা উঠবে ১৬ বছরে

চট্টগ্রাম থেকে এবার পাইপলাইনে জ্বালানি তেল যাবে ঢাকায়। আগামী মার্চ মাস থেকেই শুরু হবে তেল পরিবহন। এতে প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা পরিবহন খরচ যেমন কমবে, তেমনি চুরির শঙ্কাও রোধ পাবে। চট্টগ্রাম থেকে ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের কাজও এর মধ্যে শেষ হয়েছে। বছরে পাইপলাইনের মধ্যদিয়ে শুধুমাত্র ডিজেলই সরবরাহ করা হবে বছরে ২৭ লাখ টন।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পরিবহন খরচ কমার সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ দূষণও রোধ হবে। এছাড়া জ্বালানি তেল চুরির যে ঘটনা ঘটে, সেটিও বন্ধ হবে।

বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৬৭ লাখ টন জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ ছিল ডিজেল। এদিকে দেশের বছরে জ্বালানি তেলের গড় চাহিদা ৬৫ লাখ টন। মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ জ্বালানি তেল ব্যবহার হয় ঢাকা বিভাগে। বর্তমানে ঢাকায় তেল পরিবহনের জন্য প্রথমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নদীপথে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে সড়কপথে ঢাকায় পাঠানো হয় হয়। এজন্য প্রতিমাসে প্রায় ১৫০টি ছোট-বড় জাহাজ ব্যবহৃত হয়। এতে ২০০ কোটি টাকা বছরে খরচ হয়।

পাইপলাইনে তেল পরিবহন শুরু হলে প্রতিবছর প্রকল্প থেকে আয় হবে ৩২৬ কোটি টাকা। পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি, বিদ্যুৎ বিল, জমির ভাড়াসহ আরও কিছু খাতে ব্যয় হবে ৯০ কোটি টাকা। প্রতিবছর ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। সে হিসেবে আগামী ১৬ বছরে প্রকল্পের বিনিয়োগ উঠে আসবে।

এদিকে চট্টগ্রাম থেকে নদী ও সড়কপথে ঢাকায় জ্বালানি তেল পরিবহনে মাঝেমধ্যে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। পরিবহনের কারণে খরচ যেমন বেশি পড়ে তেমনি তেল চুরির অভিযোগও ওঠে।

প্রকল্পে ব্যয় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি

চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে তেল সরবরাহের জন্য ২০১৮ সালের অক্টোবরে ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ নামে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। দু’বছর পর ২০২০ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রথম দফায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। পরে দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ আবারও বাড়িয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ হয়।

এই প্রকল্পের ব্যয় শুরুতে ধরা হয় ২ হাজার ৮৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।

এ বিষয়ে বিপিসি মনোনীত প্রকল্প পরিচালক মো. আমিনুল হক জানান, চলতি বছরের ডিসেম্বরেই প্রকল্পের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হবে। এরপর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষে শুরু হবে জ্বালানি তেল পরিবহনের কাজ।

আগামী জানুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান বিপিসির পরিচালক (অপারেশন ও পরিচালন) অনুপম বড়ুয়া।

অনুপম বড়ুয়া আরও জানান, পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষ হলে জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তারপর মার্চ মাস থেকে শুরু হবে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল পরিবহন।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm