চট্টগ্রাম-ঢাকায় প্রচলিত ডিশ ক্যাবল আর চলবে না, নিতে হবে ডিজিটাল সেট টপ বক্স

বিজ্ঞাপন চালালে বিদেশি চ্যানেল বন্ধ ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে

৩০ নভেম্বরের পরে চট্টগ্রাম ও ঢাকা শহরে প্রচলিত পদ্ধতির ডিশ ক্যাবল সিস্টেম আর চলবে না। এনালগ সিস্টেমের পরিবর্তে পুরো ব্যবস্থাটিকে ডিজিটাল সিস্টেমের আওতায় আনা হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন চ্যানেল দেখতে হলে গ্রাহককে ডিজিটাল সেট টপ বক্স কিনে সেটার গ্রাহক হতে হবে। এছাড়া অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন প্রচার করে— এমন বিদেশি চ্যানেলগুলোও আর চলবে না চলতি সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের পর থেকে।

বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সচিবালয়ে কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাটকো, বিদেশি চ্যানেলের ডিস্ট্রিবিউটর, আকাশ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের কেবল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ডিজিটালাইড করা হবে। সেটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গ্রাহকদের অবহিত করতে একটি পরিপত্র জারি করা হবে। ৩০ নভেম্বরের পরে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরে এনালগ সিস্টেম আর কাজ করবে না। ডিজিটাল সেট টপ বক্সের মাধ্যমেই সম্প্রচারটা হবে। এখন ডিজিটাল প্লার্টফর্ম রেডি, কিন্তু দর্শকদের যদি সেটটপ বক্স দেয়া না হয় এবং তারা যদি না নেন তবে সেটা বাস্তবায়ন করা কঠিন। সেজন্য আমরা পরিপত্র জারি করব। বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহর ছাড়াও রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, কুমিল্লা, বগুড়া, দিনাজপুর, কুষ্টিয়াকে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইড করতে হবে। পুরো দেশের বিষয়টি নভেম্বরে বসে কিভাবে করা যায় তা ঠিক করব।’

চট্টগ্রাম-ঢাকায় প্রচলিত ডিশ ক্যাবল আর চলবে না, নিতে হবে ডিজিটাল সেট টপ বক্স 1

তিনি বলেন, দুটি ডিটিএইচ লাইসেন্স দেওয়া আছে। দুটির মধ্যে একটি আকাশ, আরেকটি বিটিভিকে। বিটিভি এখনও কার্যক্রমে যায়নি, খুব সহসা যাবে। আমরা দেখছি টাটা স্কাইয়ের নামে অনেক জায়গায় ডিটিএইচ সেবা বিভিন্ন জায়গায় দেওয়া হচ্ছিল, সেটির বিরুদ্ধে আমরা এনফোর্সমেন্ট করেছিলাম, অনেক কমেছে। ইদানীংকালে চীন থেকে সেটআপ বক্স এনে অন্যদের ডিস লাগিয়ে সেখান থেকে ডিটিএইচ সেবা নিচ্ছে, এগুলোর বিরুদ্ধে আমরা এনফোর্সমেন্ট করব। এগুলোর কিন্তু কঠিন শাস্তি হবে। আমি আশা করব আজকের পর থেকে সবাই এগুলো বন্ধ করবেন।

তিনি বলেন, ইন্টারনেট সংযোগ যারা দিচ্ছে, সেসব সার্ভিস প্রোভাইডাররা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভিডিও স্ট্রিমিং করে টেলিভিশনে দেখাচ্ছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে অনুমোদন ছাড়া অনেক চ্যানেল দেখানো হচ্ছে, এটা তারা কোনোভাবেই করতে পারে না। ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে আইপি টিভি দেখানো হচ্ছে। এ নিয়ে জটিলতা তৈরি হচ্ছে, একজনের ডোমেইনের মধ্যে আরেকজন প্রবেশ করছে। এটি নিয়ে আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়, টেলিকম বিভাগ ও আইসিটি বিভাগের সঙ্গে অংশীজনদের নিয়ে বৈঠক করব।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশে যেসব বিদেশি চ্যানেল আছে আইন অনুযায়ী তারা ক্লিন ফিড বা বিজ্ঞাপন ছাড়া অনুষ্ঠান চালাতে বাধ্য। কিন্তু তাগাদা দেওয়ার পরও এসব চ্যানেল ক্লিন ফিড করে পাঠাচ্ছে না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৩০ সেপ্টেম্বরের পরে দেশে কোনও অবস্থাতেই ক্লিন ফিড ছাড়া বিদেশি চ্যানেলকে চালাতে দিতে পারি না। এরপর আইন প্রয়োগ করা হবে। আইন অনুযায়ী ক্লিন ফিড ছাড়া বিদেশে চ্যানেল আমাদের এখানে সম্প্রচার করতে পারে না। এছাড়া কেবল অপারেটররা অনেক সময় সিনেমা দেখায়, বিজ্ঞাপন দেখায়, অনুষ্ঠান দেখায়। এগুলো আইনসম্মত নয়, ফলে আমরা সেগুলোর ব্যাপারেও এনফোর্সমেন্টে যাব।

হাছান মাহমুদ বলেন, পর পর দুই বছর সনদ নবায়ন না করায় ১২০০ কেবল অপারেটিং ও ফিড লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এক বছর নবায়ন না করলেই এসব সনদ বাতিল হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা করিনি। যাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে তাদের কেউ কেউ এখনও কাজ করছেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রায়ই এলাকা নিয়ে নানা সময় ঝামেলা হয়, অনেক সময় বড় ঝামেলা হয়, খুন-খারাপির মতো ঘটনাও বিভিন্ন সময় ঘটেছে। সেজন্য স্ট্রিকলি আজকে সভা থেকে বলে দিচ্ছি, একজনের এলাকায় আরেকজন কখনোই যেতে পারবে না এবং সেটার জন্য এনফোর্সমেন্ট করব।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!